প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ফের ওড়িশার ভুবনেশ্বরে বাংলার শ্রমিকদের (Bengali Migrant Workers) উপর নৃশংস অত্যাচার! রাত ১২ টা থেকে ভোর ৪ টে পর্যন্ত টানা চলেছে ভয়ংকর অত্যাচার, এদিকে গোটা ঘটনা দেখেও চুপ ছিল স্থানীয় পুলিশ। শেষে গুরুতর আহত অবস্থায় সাতজনকে ভর্তি করানো হয়েছে ভুবনেশ্বর এইমসে। প্রশ্ন উঠছে কবে থামবে এই বাংলা বিরোধী অত্যাচার? বেশ কয়েকমাস ধরে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর ‘অত্যাচারের’ অভিযোগ উঠে আসছে। বাংলার অস্মিতা রক্ষার দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন। এমতাবস্থায় ফের এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।
ঘটনাটি কী?
সংবাদ প্রতিদিনের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২৪ আগস্ট অর্থাৎ রবিবার, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ হঠাৎই একদল স্থানীয় বাসিন্দা ওড়িশার ভুবনেশ্বরে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে চড়াও হয়। বাংলাদেশি সন্দেহে অকথ্য গালিগালাজের পাশাপাশি শুরু হয় ব্যাপক মারধর। ভোর চারটে পর্যন্ত চলে সেই ভয়াবহ নির্যাতন। শ্রমিকদের দাবি, তাঁদের মোবাইল, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ঘটনার ভয়াবহতার খবর স্থানীয় পুলিশের কাছে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কিন্তু দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ, উলটে পরিযায়ী শ্রমিকদের ওড়িশা থেকে চলে যেতে চাপ দেওয়া হয়।
লোহার রড দিয়ে মারধর শ্রমিকদের
ওড়িশায় পরিযায়ী শ্রমিকদের এই মহাতাণ্ডবে এবং বাঁশ, লাঠি, লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করার ফলে গুরুতর আহত হয়েছেন ৭ পরিযায়ী শ্রমিক। গুরুতর অবস্থায় তাঁদের ভুবনেশ্বর এইমসে ভর্তি করানো হয়েছে। এবং আরেকজন শ্রমিক আবদুল আলিম মুর্শিদাবাদে ফিরে এসে এখন লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি জানান, বাংলাদেশি তকমা দিয়ে তাঁদের বাঁশ-লাঠি, লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা, কাগজপত্র সব নিয়ে নিয়েছে। জানা গিয়েছে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থানা এলাকার তিনজন, লালগোলা থানা এলাকার তিনজন এবং ভগবানগোলা থানা এলাকার দু’জন পরিযায়ী শ্রমিক ভুবনেশ্বরের মহাবীরনগরের একটি জায়গায় পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে গিয়েছিলেন। আর সেখানেই ঘটে এই ঘটনা।
আরও পড়ুন: কন্যা সন্তানের মা হল নাবালিকা! বাবা কে? ধর্ষণের অভিযোগ তৃণমূল নেতার ভাইপোর বিরুদ্ধে
ক্ষুব্ধ শাসকদল
বিজেপি শাসিত ওড়িশা রাজ্যের ফের বাঙালি পরিযায় শ্রমিকদের অত্যাচারের এই ঘটনা প্রসঙ্গে ফরাক্কার তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল ইসলাম চরম ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “গোটা ঘটনার খবর আমি পেয়েছি। কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের পরিবর্তন না হলে এই অত্যাচার কখনোই থামবে না। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এক রাজ্যের মানুষ অন্য রাজ্যে যাবেনই। কিন্তু কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদেরকে কোনও নিরাপত্তা দিতে পারছেন না। এটা অত্যন্ত লজ্জার।” গর্জে উঠেছে আরও এক তৃণমূল বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকার। তিনি বলেন, “কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বাংলাকে ভয় পাচ্ছে। তাই এখন যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস করে দেওয়াই লক্ষ্য। কিন্তু এই রূপ ঘটনাকে কিছুতেই রেয়াত করা হবে না। আমরা শীঘ্রই প্রতিবাদে নামব।” যদিও এই হামলা প্রসঙ্গে ওড়িশা প্রশাসনের তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
| গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
| চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
| রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
| খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |
