পারিবারিক অশান্তি থেকে শুরু করে ডিভোর্স মামলায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বাড়ির ছোটরা। তবে এবার আদালত চত্বরে এমন এক ঘটনা ঘটলো যা সিনেমার চিত্রনাট্যকেও রীতিমতো হার মানাবে। কেউ হয়তো ভাবতেও পারেননি এমন এক ঘটনা ঘটে যাবে সকলের চোখের সামনে।
কী হয়েছিল
শিয়ালদহ কোর্টে একটি খোরপোশের মামলা চলছিল। কিন্তু সেই মামলার নিষ্পত্তি হল এক খুদের হস্তক্ষেপে, তাও কিনা আবার আদালতের বাইরে। শুনে চনোকে গেলেন তো? কিন্তু এটাই সত্যিই। তাহলে ব্যাপারটা খুলে বলাই যাক। ডিভোর্স বা খোরপোশের মামলায় সংসার জোড়া লাগে এমন ঘটনা এক কথায় বিরল। কিন্তু বাংলায় এমন ঘটনা ঘটেছে বৈকি। ২০২৩ সালে স্বামীর বিরুদ্ধে খোরপোশের মামলাও দায়ের করেছিলেন গৃহবধূ বাবলি মন্ডল। যদিও বাবলির অভিযোগ ছিল স্বামী স্বপন দাস ঠিক করে টাকা পয়সা দিচ্ছিলেন না। আর এই মামলায় শুনানি ছিল সোমবার। বাবলি দেবী নিজের ৬ বছরের সন্তানকেও আদালতে এনেছিলেন। এরপরে যা হল সেটা দেখার জন্য হয়তো কেউই তৈরী ছিলেন না।
বাবা স্বপন দাসকে দেখে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে খুদে। এরপর মায়ের থেকে হাত ছাড়িয়ে ছুট্টে বাবার কাছে চলে যায় ফুটফুটে খুদেটি। এরপর ছেলেকে শান্ত করতে ছেলেকে আদর করে কেক ও লজেন্স কিনে দেন বাবা স্বপন দাস। এই ঘটনায় সকলে সাময়িকভাবে হতচকিত হলেও পরে যে ঘটনা ঘটে তা দেখে সকলে আরও অবাক হন।
কোর্টের বাইরেই জোড়া লাগল ভাঙা সংসার
এরপর বাবলি দেবীর বাবা মা জামাইয়ের সঙ্গে নাতির এই দৃশ্য দেখে অবাক হয়েছে যান। পরিবার থেকে শুরু করে কোর্ট চত্বরে থাকা সকলেরই চোখ ভিজে যায়। এরপর দু পক্ষই মামলা মিটমাট করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বাবলি দেবী বলেছেন, ‘আমার মা‑বাবার কথামতো স্বামীর সঙ্গে আলোচনা হল। আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলব মামলা তুলে নেওয়ার জন্য। আমাদের জন্য ক্ষতি হচ্ছে সন্তানের। ছেলেটাকে কষ্ট দিতে চাই না।’
অন্যদিকে স্বপন দাসও বলেন, ‘সমস্যা হয়েছিল সংসারে। আলোচনা করে মিটিয়ে নেওয়া যেত। কিন্তু ও (বাবলি) ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে গেল। এতদিন কষ্টের মধ্যেই দিন কাটাচ্ছিলাম, আজ ছেলেকে পেয়ে খুব আনন্দ হচ্ছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আইনি সমস্যা মিটিয়ে একসঙ্গে থাকতে শুরু করব আমরা।’