প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কালীপুজো মিটলেই সামনে পশ্চিমবঙ্গের ৬ কেন্দ্রে উপনির্বাচন। ইতিমধ্যেই বিরোধীদল সহ শাসকদলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই আবহেই ফের আরও একবার হাইকোর্টের কাছে মাথা নত হতে হল প্রশাসনকে। বরখাস্ত শিক্ষিকাকে পুনর্বহালের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।
ঘটনাটি কী?
ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি এডুকেশন রুল ২০০১ অনুযায়ী নিয়ম বহির্ভূত ভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল মহেশতলার গণিপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সুরঞ্জনা মণ্ডলকে। আর এই অভিযোগে তাই সরাসরি কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন শিক্ষিকা। এবং ওই মামলা এসে পড়ে বিচারপতি অমৃতা সিংহর বেঞ্চে। তিনি অ্যাপেলেট কমিটি গঠন করে শিক্ষিকার অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। এরপর চলতি মাসের প্রথমে ওই কমিটি শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করার নির্দেশ খারিজ করে দেয় কমিটি। এবং চাকরিতে ফের পুনর্বহাল করে তাঁর বকেয়া বেতনও মিটিয়ে দিতে বলা হয়। কিন্তু তাতেও কাজ হাসিল হয় না।
কারণ পর্ষদের চেয়ারম্যান অজিত নায়েক জানান, “এখনও কমিটির নির্দেশ হাতে পাইনি। তাই আমরা পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ করতে পারছিনা।” এই আবহে সুরঞ্জনার পাল্টা দাবি তিনি আসলে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দেওয়া ও শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে নাগরিক আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন। প্রশাসনের বিরুদ্ধে এইভাবে বিরোধিতা করার জন্য তাই মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে গত বছরের জুলাইয়ে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এমনকি ওই বছরের ডিসেম্বরে বরখাস্তও করা হয় তাঁকে। এরপর গত ২৭ এবং ৩০ সেপ্টেম্বর শিক্ষিকার আবেদনের শুনানি হয়।
কেন বরখাস্তের নির্দেশ খারিজ করা হয়েছে?
জানা গিয়েছে, গত ১ অক্টোবর সুরঞ্জনাকে পুনর্বহালের আদেশ দেয় অ্যাপেলেট কমিটি। সেই কমিটি জানিয়েছে, শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য পদক্ষেপ করার নিয়ম এ ক্ষেত্রে মানা হয়নি। এমনকি শুনানির সময়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে জমা দেওয়া তদন্ত রিপোর্টে সাক্ষীদের বয়ান বা সই, কিছুই ছিল না। ওই শিক্ষিকাকে তাঁর সাক্ষীদের হাজির করানোর সুযোগও দেওয়া হয়নি। ‘চরম শাস্তি’ সংক্রান্ত যে চিঠি শিক্ষিকাকে পাঠানো হয়েছিল, তার সঙ্গেও তদন্তের কোনো রিপোর্ট দেওয়া হয়নি। সেই কারণে ওই শিক্ষিকার সাসপেনশন ও বরখাস্তের নির্দেশ খারিজ করা হয়েছে। তবে এই প্রসঙ্গে অ্যাপেলেট কমিটি আরও বলেছেন যে, ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে তার ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্ত করা যেতেই পারে। তবে তা হতে হবে নিয়ম মেনে।