তীব্র গরম দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাংলাজুড়ে। এদিকে গরম আবহাওয়ার মাঝেই গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো দেখা দিল জলের সমস্যা। ভ্যাপসা গরমের মাঝেই খাস কলকাতায় নতুন করে জলকষ্ট দেখা দিয়েছে, যে কারণে উত্তর কলকাতা থেকে শুরু করে দক্ষিণ কলকাতার মানুষের মধ্যে তীব্র হাহাকার দেখা যাচ্ছে।
স্নানের জলের কথা তো ছাড়াই যাক, খাওয়ার জল অবধি মিলছে না। হা পিত্যেশ করে বসে থাকতে হচ্ছে রীতিমতো সকলকে। মূলত বেঙ্গালুরুর পর এবার কলকাতায় বড়সড় জলের সমস্যা তৈরি হল। কলকাতায় ভূগর্ভস্থ জলস্তর উল্লেখযোগ্যভাবে নেমে যাওয়ায় তীব্র জলসঙ্কট দেখা দিয়েছে। যে হারে গরম বাড়ছে সেখানে জলের সংকটকে মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না মানুষজন। এখন পুরসভার দিকেই বেশিরভাগ মানুষ তাকিয়ে থাকছেন।
জানা যাচ্ছে, বিগত সাত থেকে দশ দিনে কলকাতায় জলের ট্যাঙ্কারের চাহিদা অন্তত দেড় গুণ বেড়েছে। অনেকেরই বক্তব্য, কলকাতা ও গোটা বাংলার বিভিন্ন জায়গায় ভূগর্ভস্ত জল ১০ থেকে ২০ মিটারের নিচে আছে। ১০ শতাংশ এলাকায় এই জল রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ মিটারের নিচে। ফলে জলের সমস্যা ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে সর্বত্র। আবার কেউ কেউ বলছেন, শহরের বুকে বেআইনি নির্মাণে লাগাম পড়ানো না গেলে অচিরেই বড় বিপদ নেমে আসবে। কয়েক ফোঁটা জলের জন্য অবধি সকলকে চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ
এই প্রসঙ্গে উদ্বেগের কথা বলেছেন পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ সোমেন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলছেন, ‘বৃষ্টির জল গাছের মধ্য দিয়ে মাটির নিচে যায়। এখন দেখা যাচ্ছে গত দশ বছরে কলকাতার গাছগাছালি ৩০ শতাংশ কমে গিয়েছে। গাছ নেই বললেই চলে। শহর ক্রমেই মরুভূমির রূপ নিচ্ছে। সে কারণেই জল গাছের মাধ্যমে মাটির তলায় যেতে পারছে না। দশ বছরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পুকুর ভরাট হয়ে গিয়েছে। সেই জল মাটির নিচে যেতে পারছে না। যেভাবে চারদিক বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছে তা ঠিক নয়। পিচ ঢালা, বাঁধানোর কাজ ঠিকভাবে হয়নি। গাছের গোড়া পর্যন্ত বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছে। জল নিচে যেতে পারছে না। লু বইলে জলস্তর আরও কমবে।’