জ্যোতিপ্রিয় অতীত, রেশন দুর্নীতিতে ED-র হাতে আরেক নাম! এবার কে? তুলকালাম রাজ্যে

Published on:

ed jyotipriya mallick ration scam

ইন্ডিয়া হুড ডেস্কঃ দিন যত এগোচ্ছে ততই যেন রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে চমকের পর চমক উঠে আসছে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। বর্তমানে এই রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে বেশ কিছু হেভিওয়েট জেলের অন্দরে রয়েছেন, যার মধ্যে অন্যতম হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বর্তমানে এই মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED। আর তদন্ত করতে নেমে ইডি একের পর এক যোগসজোশের তথ্য প্রমাণ পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে । দু’দিন আগেই এই দুর্নীতি কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দেগঙ্গার তৃণমূল ব্লক সভাপতি আনিসুর রহমান ও তাঁর ভাই নূর আলমকে গ্রেফতার করেছে ইডি। আরো এক বড়সড় তথ্য পেল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বলে জানা গিয়েছে। ইডির নজরে উঠে এলো আরো এক ব্যক্তি, যিনি কিনা ‘মনাদা’ নামে পরিচিত।

 দুর্নীতিকাণ্ডে ইডির নজরে ‘মনাদা’

WhatsApp Community Join Now

দুর্নীতি কাণ্ডে তদন্ত নেমে এবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজরে উঠে এলেন ‘মনাদা’ নামে এক ব্যক্তি। এখন আপনিও নিশ্চয় ভাবছেন যে কে এই লোকটি? তাহলে বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই লেখাটির উপর। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি এই মামলায় ধৃত আলিফ নুরের সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের টাকার লেনদেনের সম্পর্কের খোঁজ করতে গিয়েই ‘মনাদা’র নামটি উঠে আসে। অভিযোগ, এই ‘মনাদা’ নামের ব্যক্তিটি নাকি রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে সাড়ে ১১ লাখ টাকা দিয়েছেন। তদন্ত নেমে এমনই প্রমাণ পেয়েছেন আধিকারিকরা বলে খবর।

বেশ কিছু দুর্নীতির পাশাপাশি রেশন দুর্নীতিতেও যে একটা বড় অংকের টাকার খেলা হয়েছে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে ইডি। যে কারণে এই ঘটনার তদন্ত নেমে কোনওরকম ফাঁকফোঁকোর করে রাখতে চাইছেন না আধিকারিকরা। কয়েকদিন আগেই দেগঙ্গা সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযানে নামে ইডি। আধিকারিকদের নজরে ছিল একের পর এক রাইস মিল। এই রাইস মিল গুলি খোঁজ করতে গিয়েই দেগঙ্গার তৃণমূল ব্লক সভাপতি আনিসুর রহমানের খোঁজ মেলে। আনিসুর রহমান থেকে শুরু করে বাকিবুর বিশ্বাসের ফ্ল্যাটেও বেশ কিছু তল্লাশি চালানো হয়। যাদের মধ্যে অন্যতম বাকিবুর বিশ্বাসের ফ্ল্যাটে দুবাই যোগেরও সন্ধান পান আধিকারিকরা। সেই নিয়েও জোরদার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে খবর।

বড় দাবি ইডির

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে বাকিবুর রহমানের কেন কোটি কোটি টাকা আর্থিক লেনদেন হয়েছিল? খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালীন কেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে দেড় কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল সেইসব নিও প্রশ্ন তুলেছে ইডি। তবে এ সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে আনিসুর রহমান ও তার ভাই। দুজনে এই বিষয়ে রীতিমতো মুখে কুলুপ এঁটেছেন বলে অভিযোগ।

ইডি সূত্রে দাবি, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও আনিসুর রহমানের চার্টার্ড অ‌্যাকাউন্ট‌্যান্ট শান্তনু ভট্টাচার্যর স্ট্র‌্যান্ড রোডের অফিসে তল্লাশি চালিয়ে কম্পিউটার থেকে ‘ই এইচ গ্রুপ অফ কোম্পানি’র ২০২১ থেকে ২০২২ সালের ব‌্যালান্স শিট উদ্ধার করে। এরপর সেই সূত্র ধরে পাঁচটি সংস্থা ‘গ্রিনিশ’,‘সেন্টার অ‌্যান্ড মার্ট’,‘ইঞ্জিনিয়ারিং’,‘পিকাসো’ ও ‘গ্রিনরাশ’ এর সন্ধান পায় ইডি। ইডির সন্দেহ, এই প্রত্যেকটির কর্ণধার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও তাঁর স্ত্রী। এই সংস্থাগুলির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা নয় ছয় হয়েছে বলে মনে করছে ইডি। পাঁচটি সংস্থার অ‌্যাকাউন্টেই নাকি সব মিলিয়ে নগদ প্রায় ৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা জমা পড়ে। দুর্নীতি কান্ডের দ্রুত দুই ভাইয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ইডির নজরে রয়েছে। ইডি সূত্রে যাবি এর মধ্যে আনিসুরের ভাই আলিফ নুরের মাধ‌্যমে ‘ই এইচ’ সংস্থাগুলিতে জমা পড়েছে ৯৪ লাখ টাকা। এ ছাড়াও ‘মনাদা’র হাত থেকে সাড়ে ১১ লাখ টাকা জমা পড়েছে ওই আর্থিক বছরেই।

হয়েছে কোটি টাকার খেলা!

ইডি তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে যে নাকি ওই ৫ সংস্থার সব মিলিয়ে আগে মূলধন ছিল ২৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯৯৯ টাকা। সেখানে এক বছরেই ওই সংস্থাগুলির অ‌্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। আলিফ নুরের কাছ থেকে এই পাঁচটি সংস্থায় ৯৪ লাখ ১৪ হাজার টাকা জমা পড়েছে ২০২১ সালের আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে। এত টাকা কোথা থেকে এলে, এখন সেটাই খুঁজতে তদন্ত শুরু করেছে ইডি।

সঙ্গে থাকুন ➥
X