প্রীতি পোদ্দার, দুর্গাপুর: আরজি করের পর এবার দুর্গাপুর (Durgapur)! ফের মেডিক্যাল কলেজে পড়ুয়া ধর্ষণের অভিযোগ উঠল শিরোনামে! চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি এলাকা জুড়ে। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনায় গোটা রাজ্যজুড়ে তোলপাড় কাণ্ড ঘটে গিয়েছিল। আন্দোলনের ঝড় রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে সকল রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। এখনও কাটেনি সেই তীব্র জ্বালার রেশ, আর তার মাঝেই ফের ঘটল আরও এক ঘটনা।
ঘটনাটি কী?
রিপোর্ট অনুযায়ী গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার, দুর্গাপুরের এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে দ্বিতীয় বর্ষের এক ডাক্তারি ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিতা ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা। রাত প্রায় ন’টা নাগাদ ওই ছাত্রী তাঁর সহপাঠী এক ছাত্রের সঙ্গে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে খাবার খেতে বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে নাকি পাঁচ যুবক এসে তাঁদের আটক করে এবং ছাত্রীকে জোর করে রাস্তা থেকে তুলে পাশের জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়। আর সেখানেই গণধর্ষণ করা হয় ওই ছাত্রীকে। পরে তরুণীর সহপাঠী তাঁকে উদ্ধার করে কলেজে নিয়ে যান। ভর্তি করানো হয় ওই হাসপাতালেই। প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, নির্যাতিতা ওডিশার বাসিন্দা।
নির্যাতিতা পরিবারের অভিযোগ
ঘটনার খবর পেয়ে নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের গোটা ঘটনাটি জানানো হলে সঙ্গে সঙ্গে গোটা পরিবার দুর্গাপুরে চলে আসেন। হাসপাতালে পৌঁছে মেয়ের সঙ্গে দেখা করে তারা জানতে পারেন পুরো ঘটনার বিবরণ। নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘মেয়েকে দুর্গাপুরে ডাক্তারি পড়তে পাঠিয়েছিলাম। তাঁর সঙ্গে নির্যাতনের এমন ঘটনা ঘটবে ভাবতেও পারিনি। যা পরিস্থিতি মেয়েকে আর এখানে রাখব না।’ তবে এই ঘটনায় নির্যাতিতার সহপাঠী ছাত্রকে সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ রাখতে চাইছে না পরিবার। তাঁদের দাবি যে ছাত্রের সঙ্গে ওই তরুণী কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়েছিলেন, তাঁর ভূমিকাও অত্যন্ত সন্দেহজনক। তাই তাঁকেও জেরা করা হোক। ”
আরও পড়ুন: মুখে কালি, চুলের মুঠি ধরে জুতোপেটা! ‘নিম্নবর্ণের’ পঞ্চায়েত প্রধানকে চরম হেনস্থা তৃণমূলের
ইতিমধ্যেই ধর্ষণের ঘটনার খবর পেয়ে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছেন। এবং অভিযুক্তদের সন্ধানে একাধিক দলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত দুর্গাপুর মেডিক্যাল কলেজের কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ প্রশাসন এই ঘটনায় কোনও মন্তব্য করেনি। যার ফলে চিকিৎসা মহলে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে পড়ুয়াদের একাংশ দাবি তুলেছেন যে মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হোক এবং কলেজের আশপাশে নজরদারি জোরদার করা হোক।