শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ ২০২২ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল ২০২৪ সালে। নতুন করে বাংলায় এক বড় রকমের ঘটনা ঘটে গেল যেটি সম্পর্কে হয়তো কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পাননি এতদিনে। তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প (Taruner Swapna Scheme) থেকে শুরু করে লক্ষ্মীর ভান্ডার (Lakshmir Bhandar), বার্ধক্য ভাতার টাকা আচমকাই যেন কর্পূরের মতো উবে গেল। আর এই ঘটনা রীতিমতো উদ্বেগ বাড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে নির্দেশিকা পাওয়ার পরেই তদন্ত শুরু করে দিয়েছে রাজ্য পুলিশ। শুধু তাই নয় ২০২২ সালে কে হিস্ট্রিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ বলে খবর।
তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের
তদন্ত করতে নেমে রীতিমতো চোখ কপালে উঠে গিয়েছে রাজ্য পুলিশের। এমনিতে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কেউ যদি কোনও সরকারি প্রকল্পের জন্য আবেদন করেন তাহলে সে উক্ত ব্যক্তির অন্য কোন প্রকল্পে আবেদন না করা থাকতে হবে। এটাই প্রাথমিক শর্ত থাকে, অথচ তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে যে একজন ব্যক্তির অ্যাকাউন্টেই বার্ধক্য ভাতা, লক্ষ্মীর ভান্ডার-এর টাকা ঢুকে রয়েছে। আর এটা কিভাবে সম্ভব হল তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে।
এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন যে ঘটনাগুলি কোথায় ঘটেছে? তাহলে জানিয়ে রাখি, রাজ্য পুলিশ পূর্ব বর্ধমান ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এরকম অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে। গোটা বিষয়টির ওপর বর্তমানে নজর রাখছে রাজ্য পুলিশ থেকে শুরু করে নবান্নের শীর্ষ পর্যায় আধিকারিকরা। ২০২২ সালেও ট্যাবের টাকা গায়েব নিয়ে একই ঘটনা ঘটেছিল। সেইসময়ে দুজনকে গ্রেফতার অবধি করা হয়েছিল।
গায়েব একের পর এক প্রকল্পের টাকা
এমনিতে বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে শুরু করে বার্ধক্য ভাতা, তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে টাকা কেউ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলেছে। অন্যদিকে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের তহবিল গায়েবের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপকারভোগী শিক্ষার্থীরা কেন তহবিল পায়নি তা খুঁজে বের করতে এবং প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পূর্ব মেদিনীপুর ও পূর্ব বর্ধমানের ছ’টি স্কুলের প্রায় ১০০ পড়ুয়া ট্যাব কেনার জন্য বরাদ্দ ১০ হাজার টাকা পায়নি। রাজ্য সরকার পুজোর আগে তহবিল বিতরণ শুরু করেছিল, তবে কয়েকদিন পরে, এটি সনাক্ত করা হয়েছিল যে কিছু শিক্ষার্থী বরাদ্দকৃত ১০, ০০০ টাকা পায়নি এবং এটি কিছু অজানা অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়েছিল। রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর ইতিমধ্যেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে। প্রধান শিক্ষকদের নাম উল্লেখ করে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (ডিআই)। পূর্ব বর্ধমানে পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।