প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দেখতে দেখতে নতুন শিক্ষাবর্ষের ১০ মাস কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত স্কুলে এল না কম্পোজিট গ্রান্টের (Composite School Grant) একটা টাকাও। আর তাতেই প্রত্যেকটি স্কুলে বাড়ছে উদ্বেগ ও চিন্তা। সূত্রের খবর বছরের শুরুতে যে টাকা আসার কথা ছিল স্কুলগুলিতে বছর শেষেও সেই টাকা মিলছে না। এদিকে প্রত্যেক শিক্ষাবর্ষের শুরুতে প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি থেকে শুরু করে হাইস্কুল, সকলেই রাজ্যের কাছ থেকে একটা ফান্ড পায়। কিন্তু সেই টাকা এখনও না মেলায় উঠছে নানাবিধ প্রশ্ন। এমনকি এও প্রশ্ন উঠছে যে পড়াশোনার জন্য চক ডাস্টারই বা কেনা হবে কী দিয়ে?
স্কুলে স্কুলে এখনও মেলেনি কম্পোজিট গ্রান্টের টাকা?
আসলে কম্পোজিট গ্রান্টে যে নির্দিষ্ট টাকা নির্ধারণ করা হয় থাকে তা দেয় কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার। কেন্দ্র দেয় ৪০ শতাংশ এবং রাজ্য দেয় ৬০ শতাংশ। এই টাকাতেই স্কুলগুলিতে চক-ডাস্টার কেনা থেকে বিদ্যুতের বিল মেটানোর মতো প্রাথমিক চাহিদার কাজ সুসম্পন্ন হয়। প্রাইমারির ক্ষেত্রে পাওয়া যায় ২৫ হাজার, আপার প্রাইমারির ক্ষেত্রে পাওয়া যায় ৫০ হাজার এবং হাইস্কুলকে রাজ্য দেয় ৭৫ হাজার টাকা। কিন্তু এবার ১০ মাস কেটে গেলেও স্কুলগুলি সেই ফান্ড এখনও পায়নি বলে বড় অভিযোগ উঠে আসছে প্রধান শিক্ষকদের তরফ থেকে।
ক্ষিপ্ত প্রধান শিক্ষকের একাংশ
প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি জানান, ‘‘এক হাজারের বেশি পড়ুয়ার স্কুলগুলো এক লক্ষ তো দূরের কথা, ৫০ হাজারও নিয়মিত পাচ্ছে না। অনেক স্কুলে চক, ডাস্টার, বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের চার্ট, গ্লোব, কেনার পয়সাও নেই। স্কুলের দৈনন্দিন খরচ চলবে কী করে?’’ তবে অনেক প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, এইমুহুর্তে চেয়ার-টেবিল ভেঙে গেলে তা সারানো এবং স্কুল ভবনের ছোটখাটো মেরামতির কাজ এখন বন্ধ আছে তার কারণ এখনও তারা পর্যাপ্ত কম্পোজ়িট গ্রান্ট পাননি।
কী বলছে শিক্ষা মহল?
বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডার কথায়, ‘‘এমনিতেই বহু প্রাথমিক স্কুলের পরিকাঠামো খারাপ। এর ফলে পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে। পড়ুয়ার সংখ্যা কমায় কম্পোজিট গ্রান্ট বাবদ টাকাও কমছে। ফলে স্কুলগুলোর হতশ্রী অবস্থা ঘুচছে না। দ্রুত কম্পোজ়িট গ্রান্ট দেওয়ার জন্য আমরা বিকাশ ভবনকে চিঠি লিখেছি।’’ শিক্ষা মহলের কম্পোজিট টাকা প্রসঙ্গে যখন বিতর্কের ডানা বাঁধছে তখন শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, চলতি বছরের কম্পোজ়িট গ্রান্টের বরাদ্দ টাকা অনুমোদনের জন্য অর্থ দফতরে পাঠানো হয়েছে। শীঘ্রই অনুমোদন হতে গেলেই চলতি মাসের শেষের দিকেই এই টাকা স্কুলে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।