প্রীতি পোদ্দার, খড়দহ: এনআরসি-এসআইআর নিয়ে আতঙ্কের কারণে গত মঙ্গলবার আত্মহত্যা করেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটির বাসিন্দা প্রদীপ কর। ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছিল ‘সুইসাইড নোট’। যা নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। আর তারপরেই খবরের শিরোনামে আসছে SIR আতঙ্কে একের পর এক নাগরিকের আত্মহত্যার ঘটনা। এমতাবস্থায় ফের এসআইআর আতঙ্কে আত্মহত্যার চেষ্টা করল খড়দহের (Khardaha) এক যুবক। বাড়ির পাশের ঝোপে বিষ খেয়ে প্রাণ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল সে। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য এলাকায়।
বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা যুবকের
রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিকেলে, খড়দহের বন্দিপুর পঞ্চায়েতের ইশ্বরীপুর এলাকায় বিএলও আধিকারিকরা যায়। সেখানকার বাসিন্দা আকবর আলির বাড়িতেও যাওয়া হয়। কিন্তু ২০০২ সালের তালিকায় আকবরের নাম পাননি তাঁরা। আর সেই খবর জানাতেই রীতিমত আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি এবং তাঁর পরিবার। বারংবার বিএলও আধিকারিকরা তাঁকে আশ্বস্ত করলেও তাঁর ভয় কাটে না। শেষে বাড়ির পাশের ঝোপে তিনি বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সেই সময় তাঁর স্ত্রী জাহানারা বিবি বিষয়টি দেখে চিৎকার করে ওঠে, সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে যুবককে।
পাশে থাকার আশ্বাস পঞ্চায়েত প্রধানের
খড়দহের যুবকের আত্মহত্যার ঘটনার খবর পেয়ে এদিন তাঁর বাড়িতে যান খড়দহ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা বন্দিপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রপ্রধান প্রসেনজিৎ সাহা-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান। সেখানে যুবকের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। জানা হয়েছে ২০০২ সালে ভোটার তালিকায় নাম না থাকলেও ওই যুবক ও তাঁর পরিবারের কাছে সবরকম তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। আর তাতেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। আর তাই প্রচণ্ড আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: বালি পাচার কাণ্ডে ৭৮ কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে গ্রেফতার! কে এই অরুণ সরাফ?
আত্মহত্যার চেষ্টা নিয়ে আকবর আলি কেঁদে কেঁদে বলেন, “এসআইআর নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি। আমার কাছে বর্তমান প্যান, ভোটার-সমস্ত কার্ড আছে। বিবাহের রেজিস্ট্রির সার্টিফিকেট রয়েছে। আর কী দেখাব আমি। তাই উপায় না পেয়ে আমি এই কাজ করি।” অন্যদিকে তাঁর স্ত্রী জাহানারা বিবি বলেন, “এসআইআর নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে। তার জন্য বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। যেন কোনও কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য এবার আবেদন করব।” গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বহরমপুরের এক মুড়ি ব্যবসায়ীও ২০০২ সালের তালিকায় নাম না থাকায় গলায় দড়ি দিয়েছিলেন। খবর পেয়েই পুলিশ এবং প্রতিবেশিরা দ্রুত রবকে বহরমপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।












