প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ফের রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। প্রশ্ন ভুলের মূল্যায়ন নিয়ে প্রসঙ্গ তুলে ফের হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা দায়ের করল ২০১৭ ও ২০২২ সালের TET এ উত্তীর্ণ হতে না পারা একাংশ প্রার্থী। তাদের বক্তব্য, প্রশ্নভুল মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই কেন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু? ইতিমধ্যেই মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি ওম নারায়ণ রাই। শুনানি নিয়ে দেওয়া হল বড় আপডেট।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে তরজা
টেটের ফলাফল প্রকাশের পরই রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। রাজ্য জুড়ে ১৩,৪২১টি শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে পর্ষদ। বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বলা হয়েছিল, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রশিক্ষণ-সহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করা হবে। মোট ৫০ নম্বরের মধ্যে মূল্যায়ন করা হবে। নম্বর বিভাজনও দেখানো হয়েছে। মাধ্যমিক-৫ নম্বর, উচ্চ মাধ্যমিক-১০ নম্বর, এনসিটিই ট্রেনিং-১৫ নম্বর, টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট (TET)-৫ নম্বর, সাক্ষাৎকার-৫ নম্বর, অ্যাপটিটিউড টেস্ট-৫ নম্বর এবং এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি-৫ নম্বর। এবং এও বলা হয়েছিল যে পুজোর পরে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। এবার সেই নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে ফের হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন চাকরিপ্রার্থীরা।
ফের হাইকোর্টে উঠল মামলা
প্রশ্নভুল মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার কারণে আদালতে আপত্তি তোলা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে টেট-এর ‘ভুল প্রশ্ন’ সংক্রান্ত অভিযোগের মামলায় আগেই একটি কমিটি গঠন করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। সেখানে কমিটিকে ভুল প্রশ্ন সংক্রান্ত অভিযোগ যাচাই করে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। প্রথমে কলকাতা ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে সেই কমিটি তৈরি হলেও, পরবর্তীতে প্রেসিডেন্সি ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত কোনও রিপোর্ট জমা পড়েনি। এখনও ওই মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে আদালতে। আর এই আবহে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে ফের মামলা দায়ের করল ২০১৭ এবং ২০২২ সালের টেট অনুত্তীর্ণদের একাংশ।
আরও পড়ুন: করাত দিয়ে স্ত্রী, পুত্রের গলা কেটে আত্মহত্যা স্বামীর! চাঞ্চল্যকর ঘটনা মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায়
জানা গিয়েছে, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নতুন ভাবে চ্যালেঞ্জ করে মামলাকারীরা। হাই কোর্টের বিচারপতি ওম নারায়ণ রাই মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। মামলাকারীদের দাবি, শিক্ষকরা প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা নির্ধারণ পরীক্ষা ‘টেট’-এর প্রশ্নে ‘ভুল’ সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই কেন নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “ভুল প্রশ্নে যদি নম্বর দেওয়া হয়, অনেকেই আবার পাশ করবেন। তার আগে কেন এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলো?” আশা করা যাচ্ছে আগামী সপ্তাহেই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এই নিয়ে এখনও রাজ্য সরকারের তরফে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।