প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসক খুন-ধর্ষণ ঘটনার ২ মাসের বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে কিন্তু এখনও বিচার অধরা। এদিকে আরজি কর হাসপাতালের দুর্নীতির মামলার শুনানিতে চিকিৎসকদের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ জানিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন যে, আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, ‘‘CBI দুর্নীতির তদন্ত করছে। সে ক্ষেত্রে দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসারদের নাম পাঠালে রাজ্য বিবেচনা করবে।’’ আর এই ঘটনার কিছুদিন পরেই স্বাস্থ্যসচিব এবং রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠালো CBI।
স্বাস্থ্যসচিব এবং রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিল CBI
প্রথম দিকেই আরজি কর হাসপাতালের দুর্নীতি কাণ্ডে ফরেন্সিক মেডিসিন দফতরের অধ্যক্ষ দেবাশিস সোম এবং অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সুজাতা ঘোষ এই দুজনের নাম উঠে আসে। তাই সেই কারণে CBI তাঁদের তদন্তের আওতায় রেখেছে। এবং এই গোটা বিষয় নিয়ে গত ৯ অক্টোবর স্বাস্থ্যসচিব এবং রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI। সেখানে বলা হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছে সেই সংস্থা।
CBI কে পাল্টা চিঠি স্বাস্থ্য দফতরের
এদিকে CBI এর সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য দফতর পাল্টা চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছে, দু’জনের দুর্নীতির বিষয়ে স্বাস্থ্য ভবন অবগত নয়। তবে, তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরুর প্রস্তুতি নেওয়া যায় বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমনকি স্বাস্থ্য দফতর CBI কে এও জানিয়েছে যে হাসপাতাল থেকে ওষুধ সরবরাহ এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত সামগ্রীর বিষয়ে অর্থ বরাদ্দের অনুমোদন চাওয়া হত স্বাস্থ্য দফতরের কাছে। আবেদন অনুযায়ী স্বাস্থ্য দফতর তা মঞ্জুর করত।
CBI সূত্রে দাবি, দেবাশিস ও সুজাতাকে একাধিকবার এর আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে সেইরূপ কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ‘ঘনিষ্ঠ’ ওই দু’জন দুর্নীতি এবং বেআইনি আর্থিক লেনদেনে জড়িত বলে তথ্যসূত্র পাওয়া গিয়েছে। তবে এই আবহে আবার সমালোচনার মুখে পড়তে চলেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট। অভিযোগ উঠে আসছে থ্রেট কালচারের ছায়ায় এবার তৈরি হচ্ছে অরাজকতা। আর উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই অভিযোগ তুলল খোদ জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ।
অনিকেতদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন!
জানা গিয়েছে আজ অর্থাৎ শনিবার দুপুরে কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করবে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন। আর এই ভিডিও বার্তা দেন জুনিয়র চিকিৎসক শ্রীশ চক্রবর্তী। তিনি সেই ভিডিওতে জানিয়েছেন যে “ নির্যাতিতা দিদির বিচারের নাম করে কিছু লোকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য রোগী পরিষেবা অব্যাহত করে চলেছে। এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অরাজকতা তৈরি করে চলেছে। কিন্তু ব্যাপারে প্রতিবাদ জানাতে গেলে কয়েকজনকে থ্রেট কালচারের শিকার হতে হয়। বহিষ্কৃত করা হয়েছে একাডেমিক ও পেশাগত দায়িত্ব থেকে একাধিক ছাত্রছাত্রীকে।” তবে এই বিষয়ে এখনও কোনো মতামত দেয়নি অনিকেতরা।