প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সমাজে প্রযুক্তিগত উন্নতি যত বাড়ছে ততই যেন সাইবার ক্রাইমের সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। একের পর এক ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে লক্ষাধিক টাকা। বাদ যাচ্ছে না সরকারী প্রকল্প। সম্প্রতি রাজ্যে পড়ুয়াদের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য টাকা দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই ট্যাবের টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও নিয়ে রাজ্যে জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। তা নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে রুদ্ধশ্বাস তদন্ত চলেছিল। ধরা পড়েছিল অনেক শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষক। উদ্ধার হয়েছিল টাকাও। কিন্তু সেই জট কাটতে না কাটতেই ফের আর এক সরকারী প্রকল্পের টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েবের খবর উঠে এল।
ফের গায়েব সরকারি প্রকল্পের টাকা!
জানা গিয়েছে, উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরের পাঞ্জিপাড়ার গ্রাম পঞ্চায়েতে বাংলা আবাস যোজনার (Banglar Bari) প্রকল্পের টাকা ঘিরে শুরু হয়েছে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। সঠিক সময়ে উপভোক্তার আকাউন্টে টাকা ঢুকলেও উধাও সেই টাকা। পাঞ্জিপাড়ার সরকার পাড়া, শান্তিনগর ও নতুনপাড়া গ্রাম থেকে মোট ৯ জনের টাকা গায়েব হয়েছে। অভিযোগ, ধাপে ধাপে সেই টাকা তুলে নিয়েছে প্রতারকেরা। তাই কোনো সময় নস্ট না করে ইতিমধ্যে উপভোক্তারা ইসলামপুর সাইবার থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। পাশাপাশি গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিয়েছেন প্রশাসন। এত নিরাপত্তা এত তথ্য যাচাইকরণের পরেও কীভাবে ফের সাইবার জালিয়াতি হচ্ছে সেই নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েছে প্রশাসন।
চিন্তায় মাথায় হাত গ্রাহকদের
মহম্মদ নুরুল নামে সেখানকার এক স্থানীয় উপভোক্তা অভিযোগ জানিয়েছে যে তিনি প্রথমে ২০ হাজার টাকা তুলেছেন। কিন্তু পরে বাড়ি তৈরির জন্য টাকা তুলতে গিয়ে দেখেন বাকি টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে অভিযোগ জানালে কর্তৃপক্ষ সুদত্তর দিতে পারেননি। এখন বাড়ি কী ভাবে তৈরি করবেন তা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এদিকে ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান। তিনি বলেন, ‘ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সঙ্গে কথা হয়েছে গোটা বিষয় নিয়ে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ তবে শাসকদলের বিরুদ্ধে এই ঘটনা প্রসঙ্গে সুর চড়াতে ছাড়ছেন না বিজেপি নেতারা।
গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য সুদর্শন বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘গরিবের আবাস টাকা এক দিকে ঢুকছে। আর এক দিক থেকে গায়েব হয়ে যাচ্ছে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে প্রশাসনিক নজরদারির যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এর পিছনে থাকা চক্রটি যত শীঘ্রই আটক করতে হবে।’ তবে ইসলামপুর পুলিশ-জেলার অতিরিক্ত পুলিশে সুপার ডেন্ডুপ শেরপা র দাবি, এমন অভিযোগ সাইবার থানায় জমা হয়েছে এমন কোনো ঘটনা নাকি তাদের জানা নেই। এলে তদন্ত করা হবে।