পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ ট্রেনে করে হাওড়া গেলেই স্টেশনে ঢোকার আগেই চোখে পড়বে ৯০ বছর পুরোনো অর্ধচন্দ্রাকৃতি ব্রিজ। হ্যাঁ সকলের চেনা ‘বাঙালবাবুর ব্রিজ’ (Bangalbabu Bridge) এর কথাই বলছি। যেটা হওয়ার যাতায়াত করতে গেলেই চোখে পড়তে বাধ্য। এবার ভাঙা পড়তে চলেছে নব্বই বছর আগে তৈরী হওয়া এই ব্রিজটি। কিন্তু কেন? জানতে হলে আজকের প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
ভাঙা পড়ছে ৯০ বছর পুরোনো হাওড়া রেল ব্রিজ
একটু ঠিক করে লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে ব্রিজের মাঝের পিলারে লেখা রয়েছে ‘EIR 1933’, অর্থাৎ ১৯৩৩ সালে তৈরী করা হয়েছিল ব্রিজটি। ব্রিজটিকে মূলত ‘চাঁদমারি ব্রিজ’ নাম চেনেন বেশিরভাগ লোকেরাই। তবে স্থানীয়রা এটিকে বাঙালবাবুর ব্রিজই বলে থাকেন। তবে, জানা যাচ্ছে এবার ভাঙা পড়তে চলেছে প্রায় শত বছর পুরোনো এই ব্রিজ।
বাঙালবাবুর ব্রিজ তৈরির ইতিহাস
যেমনটা জানা যায়, ১৮৬৩ সাল নাগাদ ঢাকা থেকে কলকাতায় আসেন শ্রী বাবু রামজটন বসু। এরপর রামরতন ও রাজলোচনের দুই ছেলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রথম ভারতীয় বংশের কমিশনার হন। সেই সময় ব্যবসার সুবিধার্থে হাওড়ায় বাজার তৈরী হয় যেটা বাঙালবাবু বাজার নামে পরিচিত হয়ে যায়। সেখানেই যাতায়াতের জন্য ট্রেন লাইনের উপর একটি কাঠের ব্রিজ তৈরী হয় যা ‘বাঙালবাবু ব্রিজ’ নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীকালে সেই কাঠের ব্রিজকেই সংস্কার করে কংক্রিটের সেতু করা হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি এই সেটির সংস্কার করেছিল।
তৈরী হবে নতুন ব্রিজ
পুরোনো ব্রিজ ভাঙার পর সেখানে আরও বড় বা বলা ভালো চওড়া নতুন ব্রিজ তৈরী করা হবে। রেলের তরফ থেকে জন্য যাচ্ছে, নতুন ব্রিজটি হবে চার লেনের, সাথে থাকবে ফুটপাত। যেটিকে বিদ্যাসাগর সেতুর মত কেবল স্টেড দিয়ে তৈরী করা হয়ে। একটি ৫০ মিটারের পাইলোনের সাথে ইস্পাতের কেবল দিয়ে টান টান করা থাকবে। নতুন সেতু নির্মাণের জন্য প্রায় ১৮৪ কোটি টাকার প্রাথমিক বাজেট ধার্য্য করা হয়েছে।
কেন ভাঙা পড়বে বাঙালবাবু ব্রিজ?
সেতু ভাঙা পড়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই সকলের মনে এই প্রশ্ন এসেছে যে কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল! উত্তরে জানা যাচ্ছে, আগামী দিনে হাওড়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্মগুলি সম্প্রসারণের কাজ হবে। ২৬ বগির ট্রেন দাঁড় করানোর মত দীর্ঘ করা হবে স্টেশন। সেই কারণেই এই ব্রিজ ভাঙা হচ্ছে। নতুন ব্রিজে যেহেতু কোনো পিলার থাকবে না তাই স্টেশনের দৈর্ঘ্য বাড়াতেও কোনো সমস্যা থাকবে না।