প্রীতি পোদ্দার: বর্ষা বিদায়ের পালা প্রায় চলেই এসেছে। তবে মাঝে মধ্যে নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণাবর্তের কারণে বেশ কয়েকটি জেলায় তুমুল বৃষ্টি হয়েই চলেছে। যদিও আবহাওয়া এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বৃষ্টি দুর্যোগ এখনই যাচ্ছে না। আর এই আবহে এবার বাংলাদেশ থেকে রাশি রাশি ইলিশের দল চলে এল শিলিগুড়ির বাজারে। তবে এতদিন বাদে সোনার চাঁদ ঘরে এলেও মন মজেনি সেখানকার মাছপ্রিয়দের।
শিলিগুড়ির বাজারে কুইন্টাল কুইন্টাল মাছ
গত বৃহস্পতিবার বর্ডার অতিক্রম করে ওপার বাংলা থেকে প্রায় ৪০ টন রুপোলি ইলিশ এ রাজ্যে ঢুকেছে। তার মধ্যে শিলিগুড়িতে গত শুক্রবার সকালে এসে পৌঁছেছে ১০ কুইন্টাল ইলিশ। সেই সব ইলিশের ওজন ৭৫০ গ্রাম থেকে শুরু করে ১২০০ গ্রাম পর্যন্ত। এমনকি পাইকারি বাজারে এদিন এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশের দাম ছিল ১৮০০ টাকা। আর যেগুলি এক কেজির কম ওজনের ইলিশ সেগুলি বিক্রি করা হবে ১৬০০ টাকা কেজিতে। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বাংলাদেশের ইলিশ নিয়ে শহরবাসীর মনে তেমন কোনো উৎসাহ চোখে পড়েনি।
এদিন বাংলাদেশের ইলিশ মাছ গোটা শিলিগুড়ির বাজারে মাত্র চার কুইন্টালের মতো বিক্রি হয়েছে। বরাবর যেখানে বাংলাদেশের ইলিশ মাছ পাওয়ার জন্য মুড়ি মুড়কির মত সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ে সেখানে বাংলাদেশি ইলিশের চাহিদার তুলনায় যোগান সব সময় কম থাকে। দেখা গিয়েছে গেটবাজার, বাগডোগরা, মাটিগাড়া বাজারে ইলিশ গেলেও, মূল শহরের ৩০টির বেশি বাজারের বিক্রেতারা ইলিশ তোলেননি। এর কারণ অনুসন্ধান করতে বেশ কিছু মৎস্যজীবিদের সঙ্গে এব্যাপারে কথা বলা হয়েছে।
ইলিশের প্রতি কেন অনীহা সকলের?
মৎস্যজীবিদের মতে, বাংলাদেশের পণ্য নিয়ে বেশ অনীহা দেখা গিয়েছে এদেশীয়দের মধ্যে। তার উপর বাড়তি দাম দেখে অনেকেই ইলিশ কিনতে নারাজ। তার উপর সেটি যদি হয় বাসি। গেটবাজার, সুভাষপল্লি বাজারের বেশ কিছু বিক্রেতা জানিয়েছেন, আমরা সারা বছরই ইলিশ বেচি। তাই এখন বেশি দামে বাংলাদেশের ইলিশ এনে লাভ কী? তার উপর টানা বৃষ্টিতে খুব কম মানুষ বাজার করছে।
হায়দরপাড়া বাজারে গিয়ে আবার কয়েকজন ব্যবসায়ীর মুখে বাংলাদেশের ইলিশ বয়কটের ডাক শোনা গিয়েছে। দু-একজন উঁচু গলায় বলছিলেন, ‘এবার আর বাংলাদেশের ইলিশ আমরা আনবই না।’ তাঁদের কথা শুনে আবার অনেকেই সহমত মন , তাঁদের কাছে বাংলাদেশী ইলিশ বেশ জনপ্রিয়। অন্যদিকে চম্পাসারি সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী সুশান্ত মণ্ডলের কথায়, ‘আমাদের বাজারে এত দামি মাছ বিক্রি করা কঠিন। তার উপরে টানা বৃষ্টিতে বাজারে লোক কম। এখানে দিঘা, মুম্বইয়ের কিছু ইলিশ বিক্রি হচ্ছে।’