প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে জাল পাসপোর্ট বানানোর নানা অভিযোগ উঠে আসছে বাংলা থেকে। এমনিতেই বর্তমানে ওপার বাংলায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের পরিণতি খুবই শোচনীয়। প্রাণপণে কোনোরকমে বাঁচার জন্য ভারতে আসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আর এই সুযোগে কলকাতা থেকে জেলায় রমরমিয়ে শুরু হয়েছে পাসপোর্ট জালিয়াতি চক্র। ২ থেকে ৫ লক্ষ টাকা খরচ করলেই, হাতে পাওয়া যাচ্ছে ভারতীয় পাসপোর্ট। আর এই জালিয়াতি চক্রে অন্যতম ভূমিকা নিচ্ছেন পোস্ট অফিসের স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মীরা।
ফের ভুয়ো পাসপোর্টের হদিস কলকাতায়
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাসে ভুয়ো পাসপোর্ট এর মাধ্যমে বিভিন্ন বাংলাদেশি নাগরিককে ভারতীয় বলে দেখিয়ে ১২১টি পাসপোর্ট বানানো হয়েছে। যার মধ্যে আবার ৭৩টি পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছিল আঞ্চলিক পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষের তরফে। কিন্তু বাকি পাসপোর্ট বানানোর আগেই ধরে ফেলেছে লালবাজার তদন্তকারী দল। ইতিমধ্যে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ওই চক্রের মূল পান্ডা সমরেশ বিশ্বাস এবং তার ছেলে রিপন বিশ্বাস। এ ছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে ডাকঘরের দু’জন কর্মী দীপক মণ্ডল এবং তারকনাথ সেনকে। এঁরা দু’জনেই ডাকঘরের অস্থায়ী কর্মী।
লালবাজার তদন্তকারীদের দাবি, ওই পাসপোর্টগুলি বাংলাদেশ থেকে আগত অনুপ্রবেশকারীদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। যা বেআইনি ভাবে ব্যবহার করে বাংলাদেশের ওই নাগরিকেরা ভারতীয় পরিচয়ে ফ্রান্স এবং ইটালি-সহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে রয়েছে। তাই অবিলম্বে যাতে পাসপোর্টগুলি বাতিল করা হয়, সে জন্য পুলিশের তরফে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এছাড়াও এই কাণ্ডে এলাকার পোস্ট অফিসের সক্রিয় ভূমিকা সন্দেহে চলছে জোর কদমে তদন্ত।
তদন্তে উঠে আসছে পোস্ট অফিস
এছাড়াও লালবাজার জানিয়েছে, ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের কয়েকটি ধাপ রয়েছে। প্রথমে বেআইনি ভাবে ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশিদের জোগাড় করে, তাদের নামে ভুয়ো ভোটার ও আধার কার্ড, জাল নথি তৈরি করা। দ্বিতীয় ধাপে ওই সব নথি দিয়ে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ভুয়ো ঠিকানায় পাসপোর্টের আবেদন করা এবং বিভিন্ন ডাকঘরের পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে ওই ভুয়ো নথি আপলোড করা। ইতিমধ্যেই চক্রের প্রথম ধাপের কাজ যারা করত, তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে। সমরেশকে জেরা করে বেশ কয়েক জনের নাম উঠে এসেছে। তাদের খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃত সমরেশ এর আগে পাসপোর্ট জালিয়াতি মামলায় বারাসত, চুঁচুড়া এবং দিল্লিতে গ্রেফতার হয়েছিল বলেও প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে।
পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ অভিযুক্তদের
জানা গিয়েছে, গত সোমবার গ্রেফতার হওয়া তারকনাথ সেন এবং রিপন বিশ্বাসকে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে তোলা হয়েছিল। ওইদিন আইনজীবি সৌরীন ঘোষাল জানান, ওই চক্রের বাকি সদস্যদের খুঁজে বার করতে রিপন ও তারককে পুলিশি হেফাজতে রাখার আবেদন করা হয়েছিল। সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে আদালত আগামী ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |