প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: টানা দুদিনের বৃষ্টিতে ভয়ংকর দুর্যোগ। ভারী বৃষ্টির দাপটে এবং তীব্র স্রোতে জলের তলায় চলে গিয়েছে বাঁকুড়া থেকে মানকানালি সংযোগকারী রাস্তার উপর থাকা গন্ধেশ্বরী নদীর মানকানালি সেতু (Bankura Mankanali Bridge)। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ যাতায়াত ব্যবস্থা। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মানকানালি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। মহা বিপদে গ্রামবাসী।
উপচে পড়েছে জল!
প্রাপ্ত রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া ঝাড়গ্রামের নয় নম্বর রাজ্য সড়কে ব্যাপক বৃষ্টির জেরে উপচে পড়েছে শিলাবতী নদীর জল। এর ফলে বাঁকুড়া থেকে মানকানালি সংযোগকারী রাস্তার উপর থাকা মানকানালি সেতুর উপর দিয়ে 3 থেকে 4 ফুট উচ্চতায় প্রবল বেগে জল বইতে শুরু করে। তাই হঠাৎ করে মাঝপথেই যানবাহন চলাচল স্থগিত হয়ে যায়। যার দরুন বাঁকুড়া থেকে সিমলাপাল হয়ে ঝাড়গ্রাম যাওয়ার রাস্তা ভারী বৃষ্টির জেরে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
বিপর্যস্ত জনজীবন
জানা গিয়েছে, গত 24 ঘন্টায় 140 মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে যার জেরে গন্ধেশ্বরী নদীর মানকানালি সেতু (Bankura Mankanali Bridge) একেবারে ডুবে গিয়েছে৷ যাত্রীবাহী বাস থেকে পন্যবাহী ট্রাক সব কিছু যাতায়াত বন্ধ এই মুহূর্তে। নিম্নচাপের জেরে গতকাল থেকে এক নাগাড়ে বৃষ্টিপাত ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়ে। বিপর্যস্ত জনজীবন। ঝাড়গ্রামের বিনপুর শিবমন্দির এলাকায় বিদ্যালয় ও বসত বাড়ি জলের তলায় চলে গিয়েছে। জল বাড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন এলাকার জলাশয়গুলিতে।
এদিকে মানকানালি সেতু ডুবে যাওয়ার জেরে, বাঁকুড়া সদর শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মানকানালি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় 20 থেকে 25টি গ্রাম। শুরু থেকেই এই গ্রামগুলির বাসিন্দারা শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য সমস্ত বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল থাকে বাঁকুড়া সদর শহরের উপর। কিন্তু সেতু জলের তলায় চলে যাওয়ায় এখন দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, আর তাতেই ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা
এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর বর্ষার চোখ রাঙানিতে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয় গ্রামবাসীকে। সেতুর উপর জল উঠে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, শুধু তাই নয়, এই সেতু জলের তলায় চলে যাওয়ায় ঘুরপথে অন্ততপক্ষে 25 কিলোমিটার যেতে হয়। এদিকে প্রতি বছরই প্রশাসনিক কর্তারা আসেন এবং পাকাপোক্ত উঁচু নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে যান। কিন্তু ভোট মিটতেই সব আশ্বাস হওয়ায় উবে যায়।
আরও পড়ুন: টোটো নিয়ে কড়া সিদ্ধান্ত পরিবহন দফতরের! এবার কমবে দাপাদাপি
প্রসঙ্গত, ভারী বৃষ্টির জেরে বেশ উদ্বেগের মধ্যে পড়েছে গ্রামবাসীরা। এদিকে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস আজও জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। সুন্দরবন এলাকায় বৃষ্টি ও বাতাসের তীব্রতা বেশী। পাশাপাশি আজ ঘন্টায় 30-40 কিমি বেগে দমকা বাতাস বইতে পারে।
জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। টানা বৃষ্টির জেরে তাপমাত্রা বেশ কিছুটা কমেছে। টানা কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরম থেকে স্বস্তি মিললেও ঘোর দুর্যোগের মুখে পড়তে হয়েছে সকলকে।