প্রীতি পোদ্দার: আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। দেখতে দেখতে ২ মাস অতিক্রম হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও সুবিচার পেল না সেই মৃত তরুণী চিকিৎসক। CBI এর তদন্তের শ্লথ গতিতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। তাইতো এখনও আন্দোনের রাজপথ ছেড়ে যাননি তাঁরা। অন্যদিকে টানা ১২ দিন ধরে আমরণ অনশন করে চলেছে জুনিয়র ডাক্তারেরা। আর এই আবহে এবার তিলোত্তমার বিচার চেয়ে প্রতিবাদ করায় চাকরি খোয়াতে হল এক অস্থায়ী হোমগার্ডকে।
ঘটনাটি কী?
গত পাঁচ বছর ধরে বেলঘরিয়া থানায় অস্থায়ী হোমগার্ডের চাকরি করে আসছেন কাশীনাথ পাণ্ডা। যিনি কিনা হাওড়ার ডোমজুর এলাকার বাসিন্দা। আরজি কর হাসপাতালে তরুণীকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার বিচার চেয়ে গত ২১ আগস্ট তিনি তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন। যেখানে দেখা গিয়েছিল তিনি জনপ্রিয় একটি ভক্তগীতিকে নিজের মতো করে গাইছেন। তাঁর গলায় শোনা গিয়েছিল, ‘তুমি এবার ধরো খাঁড়া, মাঠে নামতে হবে। অসহায়-দুর্বলরা তবেই বিচার পাবে। মা গো তুমি খাঁড়া ধরো। তবেই বিচার পাবে। কালীঘাটের কালী তুমি, কৈলাসে ভবানী।” আর এই ভিডিয়োটি পোস্ট করার পর থেকেই নানা রকম ভাবে হুমকি ফোন আসতে থাকে কাশীনাথের কাছে।
মামলা হাইকোর্টে!
বেশ কয়েকদিন ধরে তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা, তাঁর উপর মানসিক নির্যাতনও চালান পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। এমনকি পোস্টটি তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। পরিবারের নামেও হুমকি দেওয়া হয়। চাকরি খেয়ে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হতে থাকে। কিন্তু তবুও তিনি ভিডিয়োটি ডিলিট না করায় গত ১০ অক্টোবর অর্থাৎ সপ্তমীর দিন তাঁকে চাকরি থেকে বসিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তুলেছেন কাশীনাথ। আর তার ভিত্তিতেই গত ১৪ অক্টোবর হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন কাশীনাথ। জানা গিয়েছে বিচারপতি পার্থসারথি সেনের এজলাসে মামলাটি উঠেছে। এবং মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামীকাল অর্থাৎ ১৮ অক্টোবর।
এইমুহুর্তে তাঁকে চাকরি থেকে ‘টার্মিনেট’ করে দিলেও নিজের পোস্ট মুছে দেননি কাশীনাথ। তাঁর ফেসবুকে এখনও সেই ভিডিয়ো আছে। এই প্রসঙ্গে কাশীনাথের আইনজীবী পিন্টু কাঁড়া জানিয়েছেন, কাশীনাথকে অনির্দিষ্টকালের জন্য চাকরি থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছে। তবে এই প্রসঙ্গে পাল্টা ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট দাবি করেন যে, “কর্তব্যে অনেক গাফিলতির কারণেই তাঁকে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।”