বাংলাদেশ ইস্যুতে অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ভারত ও ঢাকার মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতাদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে উস্কানিমূলক মন্তব্য যাতে সীমান্তবর্তী রাজ্যের শান্তি বিঘ্নিত না করে তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ যদি কোনো পদক্ষেপ নেয় তাহলে বাংলা তথা দেশ চুপ করে বসে থাকবে না সেটা সাফ বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশ ইস্যুতে সরব মুখ্যমন্ত্রী
শান্তি ফেরার যেন নামই নেই বাংলাদেশে। সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, মন্দিরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, লাগাতার অভিযোগ এসেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা নিয়ে পড়ছে বারংবার উঠছে প্রশ্ন। যে কারণে দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক অবনতির দিকে এগোচ্ছে। এদিকে এই ইস্যুতে মন্তব্য করে সকলকে চমকে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। হিন্দু, মুসলিম, শিখ বা খ্রিস্টানরা দাঙ্গা শুরু করে না। সমাজবিরোধীরা হিংসা শুরু করে। আমাদের এমন কোনও মন্তব্য করা উচিত নয় যাতে বাংলায় খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়। আমি খুশি যে এখানকার হিন্দু এবং সংখ্যালঘু উভয়ই বাংলাদেশে নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। এটা আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ স্বভাবের পরিচয় দেয়।”
আমরা বসে ললিপপ খাবো না: মমতা
এদিকে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন সদস্য তথা বিএনপি নেতা বাংলা দখল করার মন্তব্য করেছিলেন। সেই ইস্যুতে আজ সোমবার বিধানসভায় সেই ইস্যুতে পাল্টা মন্তব্য করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললেন, ”বাংলা দখলের কথা বললে আমরা বসে ললিপপ খাব না।”
তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘু নেতারা সমাবেশ করতে চেয়েছিলেন। আমি তাদের নিষেধ করেছিলাম। অনেকে এটাকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাচ্ছেন। তারা আরেকটি দাঙ্গা শুরু করবে। আমরা দাঙ্গা চাই না, শান্তি চাই। হিন্দু-মুসলিম, শিখ ও খ্রিস্টানদের রক্ত একই’।
সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান
মুখ্যমন্ত্রী গণমাধ্যমের একাংশকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কাভারেজে সংযত থাকার আহ্বান জানান। বললেন, ‘এটা উত্তরপ্রদেশ বা রাজস্থান নয় যে আমরা আপনাকে নিষিদ্ধ করব বা গ্রেফতার করব না। তবে আমি আপনাদের অনুরোধ করছি। অনেক ভুয়ো ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটি রাজনৈতিক দল আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করছে। উভয় সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। যাঁরা এটা নিয়ে রাজনীতি করার কথা ভাবছেন, তাঁদের মনে রাখা উচিত, এতে আপনার রাজ্যেরও ক্ষতি হবে, সেখানে থাকা বন্ধুদেরও ক্ষতি হবে।’
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে অনেকেই সীমান্ত রাজ্যে ঢুকতে চায়। বিএসএফ দেখছে। আমরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। যাদের টাকা আছে তারা প্লেনে বা ট্রেনে আসছেন, কিন্তু গরিবরা পাচ্ছেন না। আমরা সীমান্ত সামলাচ্ছি না। ওরা (কেন্দ্র) যাক। আমরা বিদেশ মন্ত্রকের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না।’