শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ দিন আসে দিন যায়, কিন্তু যেটা বদলায় না সেটা হল সরকারি কর্মীদের ভাগ্য। বিশেষ করে যারা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনে কর্মরত তাঁদের সমস্যার শেষ নেই। একদিকে যখন কেন্দ্রীয় সরকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজ্য সরকার নিজেদের কর্মীদের ডিএ (Dearness allowance) বৃদ্ধি করছে সেখানে অন্যদিকে বাংলার সরকারি কর্মীদের কপালে জুটছে শুধুমাত্র লবডঙ্কা। লাগাতার বিক্ষোভ, নবান্ন অভিযানের পরেও সরকারের টনক যেন নড়তেই চাইছে না। এহেন অবস্থায় নতুন করে গর্জে উঠলেন সরকারি কর্মীরা। প্রসঙ্গ উঠল সুপ্রিম কোর্টের।
কবে মিলবে DA?
বর্তমানে এই DA মামলা সুপ্রিম কোর্টে রয়েছে। ডিএ মামলা নিয়ে আবার সুপ্রিম কোর্টে বারবার শুনানি পিছিয়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিক মন ভেঙে গিয়েছে বহু সরকারি কর্মীদের। যদিও এবার এই বিষয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সভাপতি শ্যামল মিত্র। মহার্ঘ্য ভাতা মামলা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রীতিমতো আঙুল তুললেন তিনি। শ্যামল মিত্র জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার যে কোনওভাবে ডিএ মামলায় বিলম্ব করার চেষ্টা করছেন। কারণ রাজ্য ভালোমতো জানে, ২০১৮ সালের ৩১ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্টে যে রায় দেওয়া হয়েছিল, সেটার বিরুদ্ধে কোনও উচ্চতর আদালতে আবেদন করেনি। বরং রাজ্য সরকার সেই রায়কে মান্যতা দিয়েছে।
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ
বর্তমানে বাংলা সরকারি কর্মীরা ১৪ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পাচ্ছেন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা ৫৩ শতাংশ হারে ভাতা পাচ্ছেন। অর্থাৎ বাংলার সঙ্গে কেন্দ্রের DA-র ফারাক ঠিক যে কতটা তা বুঝতেই পারছেন। এদিকে বারবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানির দিকে তাকিয়ে রয়েছেন রাজ্যের হাজার হাজার সরকারি কর্মীরা। সকলের একটাই বক্তব্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার চাইলেই সকলে ডিএ বৃদ্ধি করতে পারে। কিন্তু করছে না।
রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনের নেতা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেছে, সেটা ২০২২ সালের ২০ মে হাইকোর্টের দেওয়ার রায়ের প্রেক্ষিতে। তাই তাঁরা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত যে সুপ্রিম কোর্ট যা রায় দিক না কেন, ২০১৮ সালের ৩১ অগস্ট হাইকোর্টের রায় খারিজ করে হয়ে যাবে না। সেজন্য মামলা নিয়ে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী বলে জানিয়েছেন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সভাপতি।
কী বলেছিল হাইকোর্ট?
হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত এবং বিচারপতি শেখর ববি শরাফের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দিয়েছিল যে, মহার্ঘ ভাতা সরকারের দয়ার দান নয়। সরকারি কর্মচারীদের আইনি অধিকার। তবে এই ডিএ এখনো অধরা অনেকের। কবে সকলের প্রাপ্য ডিএ মিলবে সেই অপেক্ষায় দিন গুনছেন সকলে। যাইহোক, আগামী ৭ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা ওঠার কথা আছে। রাজ্য সরকারি কর্মীদের আশা, নতুন বছরে তাঁরা হয়তো সুবিচার পাবেন।