সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে কামারপুকুর রেলস্টেশন পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে জোড় কদমে। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা এই স্টেশনের কাজ নতুন গতি পেয়েছে। রেলের সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বিষ্ণুপুর থেকে কামারপুকুর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপন করতেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কামারপুকুর বাসিন্দাদের বহুদিনের স্বপ্ন এবার বাস্তবে পরিণত হতে চলেছে।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই রেলপথ?
কামারপুকুর শুধু একটি সাধারণ এলাকা নয়। এটি স্বয়ং শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের জন্মস্থান, যা সারা বছর ধরে অসংখ্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে থাকে। এতদিন রেলপথের অভাবে পর্যটকরা এখানে সহজে পৌঁছাতে পারত না। তবে বিষ্ণুপুরের সঙ্গে সরাসরি রেল সংযোগ হলে পর্যটকরা এখানে আরো সহজে যাতায়াত করতে পারবে। ফলে কামারপুকুরের আর্থসামাজিক উন্নয়নও বৃদ্ধি পাবে। শুধু পর্যটক নয়, এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারাও এখন আরো সহজে বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া দীঘা ইত্যাদি জায়গায় ভ্রমণ করতে পারবেন।
গ্রামবাসীদের প্রতিক্রিয়া
এই রেলপথের কাজ পুনরায় শুরু হওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা গিয়েছে। কামারপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজদীপ দে বলেছেন, “এটি আমাদের দীর্ঘদিনের দাবী ছিল। এখানকার অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। রেলপথ চালু হলে কৃষকদের উৎপাদিত ফসল খুব সহজেই শহরে পাঠানো যাবে। পাশাপাশি পর্যটকদের আসা যাওয়াও খুব সহজ হবে। এর ফলে ব্যবসায় উন্নতি হবে।”
শুধু এখানেই শেষ নয়। এলাকার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “বিষ্ণুপুর থেকে ময়নাপুর পর্যন্ত ইতিমধ্যে ট্রেন পরিষেবা শুরু হয়ে গেছে। বড় গোপীনাথপুর থেকে জয়রামবাটি পর্যন্ত রেললাইন পাতার কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। যদি এই কাজ এভাবেই চলে তাহলে খুব শীঘ্রই বিষ্ণুপুর থেকে কামারপুকুর হয়ে জয়রামবাটি পর্যন্ত রেল চলাচল সম্ভব হবে। এতে আমরা আরো কম খরচে এবং কম সময়ে বিভিন্ন শহরে পৌঁছাতে পারবো।”
কীভাবে এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে?
২০১২ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তারকেশ্বর থেকে আরামবাগ পর্যন্ত রেলপথের শুভ সূচনা করেছিলেন। এর পরপরই এই রেলপথকে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত প্রসারণ করার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু গোঘাট এবং কামারপুকুরের মাঝে ভাবাদিঘির উপর রেলপথ তৈরিতে জটিলতা দেখা যায়। যার কারণে দীর্ঘদিন ধরে এই প্রকল্প স্থগিত ছিল।
আরও পড়ুনঃ অনলাইনে পরীক্ষা, ব্যাঙ্ক অফ বরোদায় ৪০০০ শূন্যপদে নিয়োগ, জেনে নিন আবেদনের পদ্ধতি
তবে বর্তমানে রেলমন্ত্রণালয় নতুন উদ্যোগ নিয়ে কামারপুকুর রেল স্টেশনকে বিষ্ণুপুরের সঙ্গে যুক্ত করার আবারও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। স্টেশনটির পরিকাঠামোগত সংস্কার চলছে। যেখানে নতুন যাত্রী প্রতীক্ষালয়, টিকিট কাউন্টার এবং স্টেশন বিল্ডিং সংস্কারের কাজও জোর কদমে এগোচ্ছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
যদি সবকিছু পরিকল্পনা মারফত চলে তাহলে খুব শীঘ্রই বিষ্ণুপুর থেকে জয়রামবাটী হয়ে কামারপুকুর পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু হবে। এছাড়া যদি ভাবাদিঘি সমস্যার সমাধান হয়ে যায় তবে কামারপুকুর থেকে সরাসরি হাওড়া পর্যন্ত ট্রেন চালু হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। কামারপুকুরের মানুষ এবং পর্যটকদের জন্য এটি একটি বড় সুখবর হতে চলেছে। কারণ এতে এলাকারও সার্বিক উন্নয়ন ঘটবে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |