বাতিল করেছেন খোদ মমতা, প্রাথমিকে সেমিস্টার চালু করতে বিপুল খরচ করল পর্ষদ, এল হিসেব

Published on:

primary education

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (West Bengal Board of Primary Education) তরফ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে জন্য হয়েছিল যে নতুন শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ ২০২৫ থেকে প্রাথমিকের পরীক্ষায় আনা হবে সেমিস্টার পদ্ধতি। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়, ঠিক তেমন ভাবেই স্কুলে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে বলে জানানও হয় শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে। তারপরেই শোরগোল পড়ে যায়। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে খবরটি। আর তাতেই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে সকলের সামনে প্রাথমিক শিক্ষায় সেমিস্টার চালু করা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ভর্ৎসিত হলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

প্রাথমিকে থাকবে না কোনো সেমিস্টার

WhatsApp Community Join Now

গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মমতা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ব্রাত্য বসু। সেই সময় আলোচনা চলাকালীন প্রাথমিক শিক্ষায় সেমিস্টার পদ্ধতি প্রসঙ্গ উঠে আসে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রাথমিক স্তরে সেমিস্টার। আমি কাগজে দেখলাম। আমি জানতাম না, মুখ্যসচিবও জানতেন না। ব্রাত্য তুমি শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু শিক্ষায় নতুন নীতি চালু করতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের সঙ্গে পরামর্শ করো।” এছাড়াও তিনি আরও বলেন, “আমি চাই বাচ্চাদের ব্যাগের ভার কমাতে। এমনিতেই এখনকার শিক্ষার ভার খুব বেশি। ওইটুকু বাচ্চারা কথাই বলতে পারে না ঠিক করে! টুইঙ্কল টুইঙ্কল লিটল স্টার বলতে পারে না। তারা সেমিস্টার দেবে? কলেজে যেটা চলে, স্কুলে চলে না। যা চলছিল, তাই চলবে। স্কুলে কোনও সেমিস্টার চলবে না।” কিন্তু এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা পরেই বিপুল টাকার লোকসান হয় পর্ষদের।

বিপুল টাকার লোকসান পর্ষদের

পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু প্রাথমিকে সেমিস্টার সিস্টেম চালু করার বার্তা দেওয়ার পরেই প্রাথমিকের সেমিস্টার পদ্ধতির ব্লুপ্রিন্ট বানানো শুরু হয়ে যায়। আর তাতে খরচ পড়েছে প্রায় ৫ লক্ষেরও বেশি। মোট ৪০ দিন ধরে ৪ জন পরামর্শদাতা পর্ষদে বসে এই কাজ করেছিলেন। কিন্তু এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রাথমিকে সেমিস্টার পদ্ধতি বাতিলের পরেই মাথায় হাত পড়ে যায় পর্ষদের। ৫ লক্ষেরও বেশি টাকা এমনি এমনি খরচ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কোনো লাভ হয়নি। আর পর্ষদের এই গাফিলতি নিয়ে বেজায় চটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উঠছে একাধিক প্রশ্ন।

জানা গিয়েছে, প্রাথমিকের সেমিস্টার পদ্ধতির ব্লুপ্রিন্ট বানানোর জন্য নাকি পর্ষদের প্রাক্তন কর্তাদেরকে সংযুক্ত করা হয়েছিল। এদিকে ৪ জন পরামর্শদাতাদের কাজেও পড়েছে একাধিক গাফিলতি। এমনকি উঠে এসেছে টেন্ডার তৈরির প্রসঙ্গ। কীভাবে টেন্ডার ছাড়া পর্ষদ এত বড় দায়িত্ব পালন করেছে তার জন্য আধিকারিকদের উপর ক্ষুব্ধ বাকিরাও। এমনকি একই প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তবে এই বিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ পর্ষদ প্রদান গৌতম পাল।

সঙ্গে থাকুন ➥
X