প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত কয়েক বছরে রাজ্যে একের পর এক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে। প্রাক্তন মন্ত্রী থেকে শুরু করে তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক, নেতা গ্রেফতার হয়েছেন। শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে বিরোধীরা। আর এই তালিকায় একদিকে যেমন রয়েছে ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়া। আবার অন্যদিকে রয়েছে ২০০৯ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি। বাম আমলে ভুয়ো এক্সচেঞ্জ কার্ড দেখিয়ে প্রাথমিকে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর এই আবহে এবার আদালতের (Calcutta High Court) কাছে তথ্য গোপন করে যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠল পর্ষদের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি কী?
আসলে বাম আমলে অর্থাৎ ২০০৯ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র নানা গোলযোগ তৈরি হয়। যার দরুন সেবছর প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার বাতিল হয়ে গিয়েছিল। এরপর সরকার পরিবর্তন হয়। নতুন সরকার গড়ে সিংহাসনে বসে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১১ সালে ফের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করার জন্য লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হলেও বাতিল হয়ে যায় পরীক্ষা। এরপর ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ আবার পরীক্ষা নেওয়া হয়। ২০১৪ সালের ১১ই নভেম্বর ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু করে উত্তর ২৪ পরগনা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাসে এই বিষয়ে এবার একটি মামলা দায়ের হয়। এরপর পর্ষদের জমা দেওয়া তালিকার ভিত্তিতে যোগ্যদের নিয়োগের নির্দেশ দেন বিচারপতি। কিন্তু এক্ষেত্রেই আদালতে (Calcutta High Court) তথ্য গোপনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। আর এই আবহে অভিযোগ ওঠে যে অযোগ্য প্রার্থীরা যোগ্য প্রার্থীদের তুলনায় বেশি চাকরি পাচ্ছে।
এরপর কলকাতা হাইকোর্টে ৫০০ জন মামলাকারীর পক্ষে মামলা করেছিলেন আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন এই ৫০০ জন চাকরিপ্রার্থীদের বেশি নম্বর থাকা সত্ত্বেও তাঁদের বঞ্চিত করা হয়েছে। মেধাতালিকায় তাঁরা স্থান না পেলেও তথ্য গোপন করে অযোগ্যদের স্থান পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এই অভিযোগ বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে উঠতেই এই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। এবং পর্ষদের প্রতি ক্ষুব্ধ মনোভাব প্রকাশ করেন।
আর পড়ুনঃ কোর্টে মামলা লড়ে ১০ বছরে ৪০০ কোটি টাকার বেশি খরচ সরকারের
পর্ষদের রিপোর্ট পেশের সময়সীমা বেঁধে দিল হাইকোর্ট
সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার প্রাথমিক নিয়োগের এই মামলায় বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করে নির্দেশ দিয়েছেন যে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এছাড়াও এদিন মামলার শুনানি চলাকালীন আদালতে বিচারপতি বসু পর্ষদের সামনে প্রশ্ন তুলে জানান, ‘প্রায় ৫০০ জন চাকরি প্রার্থী সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েও মেধা তালিকায় স্থান পাননি। অথচ অযোগ্যদের মেধাতালিকায় স্থান দিয়ে কীভাবে নিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হল?’ আর এই প্রশ্নের জবাব দিতে এবং রিপোর্ট জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে পর্ষদকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দেয় হাইকোর্ট।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |