প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কিছুদিন আগে রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার নিউ টালিগঞ্জের বাড়ি থেকে এক পুলিশকর্মীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল অসুস্থতার কারণে ওই পুলিশকর্মী ছুটিতে থাকাকালীনই নাকি তাঁর স্ত্রী এবং পুত্র তাঁকে মারধর করতেন যার ফলে মৃত্যু হয় তাঁর। আর সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের এবার গল্ফগ্রিনে আরেক মহিলার মৃত্যু রহস্য প্রকাশ্যে এল।
ঘটনাটি কী?
সূত্রের খবর, গল্ফগ্রিনে (Golf Green) রাজেন্দ্রপ্রসাদ কলোনির ফ্ল্যাটে প্রায় ৮ বছর ধরে মাকে নিয়ে থাকতেন এক মহিলা। বছর ৪০-এর ওই মহিলার নাম নাসিফা খাতুন। কিন্তু গতকাল অর্থাৎ বুধবার ওই মহিলার রক্তমাখা দেহ উদ্ধার হল খাটের তলা থেকে। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। গলায় ছিল কাটা দাগ। জানা গিয়েছে একটি ক্যাফেতে কাজ করতেন ওই মহিলা। গতকাল কাজে যাননি নাসিফা। মেয়েকে একাধিকবার ফোন করেও পাননি তাঁর মা। এরপর সন্ধ্যায় মেয়ের বাড়ি গিয়ে নাসিফার মৃতদেহ দেখে চমকে উঠেছিলেন তাঁর মা। চিৎকারে আশেপাশের প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকা জুড়ে।
গ্রেফতার ভাইপো
এদিন নাসিফার ঘরে ঢুকতেই দেখা যায় সেখানে জিনিসপত্র কিছুটা লন্ডভন্ড করে রাখা। এমনকি আলমারিও খোলা। ইতিমধ্যেই বছর ৪০-এর নাসিফা খাতুনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এবং ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্তে শেষপর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে নাসিফার বড়দার ছেলে সাবির আলিকে। তার বয়স ৩৮ বছর। হরিদেবপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, নাসিফার থেকে ১০ হাজার টাকা ধার চেয়েছিল সে। কিন্তু সেই টাকা না দেওয়ায় পিসিকে খুন করে এই যুবক। এই গুরুতর অপরাধের কথা পুলিশের কাছে কবুল করেছে সাবির।
আরও পড়ুনঃ এদের থেকে আবাসের টাকা ফেরত নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার
ঘটনার তদন্তের সময় পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল যে এই কাজ করেছেন পরিবারের ঘনিষ্ঠ কেউ। সেই সন্দেহ থেকেই সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে পুলিশ। স্থানীয়দেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শেষ ফুটেজ অনুযায়ী দেখা গিয়েছে সাবির তার পিসি নাফিসার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। আর তাতেই সন্দেহ জাগে পুলিশের মনে। সেই মুহূর্তে সাবির আলিকে পুলিশ স্টেশনে ডেকে আনা হয়। নানা ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। অবশেষে নিজের দোষ শিকার করা হয়।
আরও পড়ুনঃ বিনামূল্যে সহজেই এখানে অভিযোগ করুন ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে
জানা গিয়েছে ধার মেটানোর জন্য নাকি পিসি নাসিফার থেকে ১০ হাজার টাকা চেয়েছিল সাবির। কিন্তু তা দিতে রাজি হননি নাসিফা। এরপর পিসির উপর চড়াও হয় সাবির। নিজেকে বাঁচানোর জন্য রান্নাঘরে থাকা ছুরি দিয়ে সাবিরকে প্রথমে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে নাসিফা। কিন্তু নাসিফার হাত থেকে সেই ছুরি কেড়ে নিয়ে একাধিকবার তাঁকে আঘাত করে সাবির। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।