প্রীতি পোদ্দার, মেখলিগঞ্জ: সীমান্ত টপকিয়ে বেআইনি ভাবে বাংলাদেশীদের ভারতে প্রবেশ এখন যেন নিত্যনতুন ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের সময়ে বাংলাদেশে এক উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ওই সময়ে সাময়িক ভাবে বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাস থেকে ভিসা দেওয়া বন্ধ রাখা হয় কিছু দিনের জন্য। তখন অনেকেই সীমান্ত টপকিয়ে রক্ষীদের চোখে ধুলো দিয়ে ভারতে এসেছিল। তদন্তের নিরিখে ইতিমধ্যে অনেককেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এবার সেই বেআইনি ব্যবস্থা পুরোপুরি নির্মূল করতে কড়া পদক্ষেপ নিল BSF।
‘ইনফ্রারেড ইনট্রুডার অ্যালার্ম’ লাগাচ্ছে BSF
জানা গিয়েছে, গত রবিবার কোচবিহারের এই উন্মুক্ত মেখলিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে বাংলাদেশের এক নাগরিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। BSF এর তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, কুয়াশার সুযোগ নিয়ে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের দক্ষিণ বেরবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন ওই বাংলাদেশি। এইভাবে একের পর বাংলাদেশী বেআইনি ভাবে ঢুকে পড়ায় বেশ বিপাকে পড়েছে সীমান্তরক্ষীরা। তাই এবার এই সমস্যা নির্মূল করতে মেখলিগঞ্জ সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এবার বাংলাদেশীদের অনুপ্রবেশ রুখতে সীমান্তে ‘ইনফ্রারেড ইনট্রুডার অ্যালার্ম’ ব্যবস্থায় নজরদারি শুরু করা করেছে।
‘নাইটভিশন ড্রোন ক্যামেরা’ দিয়েও নজরদারি
এর আগে ওই সীমান্ত দিয়ে কাঁটাতারের বেড়ার উপর দিয়ে জিনিস ওপারে ছুড়ে পাচারের অভিযোগ বারবার উঠেছে। এমনকি কাঁটাতারের বেড়া কেটেও পাচারের একাধিক অভিযোগ সেখানে উঠেছে। সেই সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করতে আগে CCTV ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল। এবং কয়েকটি জায়গায় ‘নাইটভিশন ড্রোন ক্যামেরা’ দিয়েও নজরদারি চালানো হচ্ছে। আর ইনফ্রারেড ইনট্রুডার অ্যালার্ম যন্ত্রটি সিসিটিভি ক্যামেরার পাশাপাশি নির্দিষ্ট দূরত্বে বসানো হয়েছে। জলপাইগুড়ি সেক্টরের ৪০ নম্বর ব্যাটেলিয়নের আওতাধীন কুচলিবাড়ি পঞ্চায়েতের কলসীপাড়া, বিআরকে বাড়ি-সহ কয়েক কিলোমিটার সীমান্তে ওই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
BSF সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যন্ত্র থেকে ‘ইনফ্রারেড আলো’ বার হয়। আপাতদৃষ্টিতে অদৃশ্য সেই আলোর রশ্মি কোনও প্রাণী বা বস্তুতে ‘বাঁধা’ পেলেই বিএসএফের শিবিরে অ্যালার্ম বেজে উঠবে। আর তাতেই সতর্ক হবেন জওয়ানেরা। এবং ধরে ফেলবেন। BSF এর জলপাইগুড়ি সেক্টরের ডিআইজি বলেন, ‘‘অত্যন্ত স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে নজরদারি চালাতে এই বিশেষ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তাতে যথেষ্ট সাফল্য মিলছে।’’ এইমুহুর্তে কুচলিবাড়ির প্রায় ১৭-১৮ কিলোমিটার এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরা ও বিশেষ সেই নজরদারি ব্যবস্থায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। বাকি এলাকাগুলিতেও তা শীঘ্রই বসানো হবে।