প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বছর জুলাই মাস থেকে ক্রমেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। শুরুটা হয়েছিল কোটা বাতিল নিয়ে। এরপর সেই আন্দোলন এতটাই ভয়ংকর আকার নিয়েছিল যে বাধ্য হয়েই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ ত্যাগ করেছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ত্যাগ করার পরেও শান্ত হয়নি পরিস্থিতি। মুহাম্মদ ইউনূস এর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেও পরিস্থিতি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আসেনি সেই দেশে। বরং দিনকে দিন যেন অরাজকতা বেড়েই চলেছে। এমনকি বিগত কয়েক দিন ধরে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ সীমান্তে বহু বাংলাদেশি পাচারকারী আসা যাওয়া করছে। আর এই আবহে ভারতের দখলে থাকা ভূখণ্ড নিজেদের দখল পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি করেছে BGB।
ভারতীয় ভূখণ্ড দখল BGB-র?
আসলে ১৯৭৫ সালে সীমান্ত চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশের কোদলা নদীর প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের মতো জায়গা ভারতীয় ভূখণ্ড হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল। যেহেতু ভারতীয় ভূখণ্ড তাই কোনো বাংলাদেশী এখানে আসতে পারত না। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে দু’দেশের মধ্যে এই এলাকা দখলকে নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই আবহে সম্প্রতি BSF-এর সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনায় বসেছিল BGB। এদিকে গত সোমবার সেই আলোচনার ভিত্তিতে BGB দাবি করে বসে যে ভারতের দখলে থাকা ৫ কিলোমিটার এলাকা এবার BGB নিজেদের দখলে নিয়ে নিয়েছে। BGB-র সদ্য নিযুক্ত কর্নেল পদমর্যাদার এক আধিকারিক এই বিষয়ে জানান, BSF এর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ভারতীয় ভূখণ্ডের ৪.৮ কিমি অংশ নিজেদের অধিকারে নিয়েছে বাংলাদেশ। আর এ নিয়ে রীতিমত বিবৃতিও প্রকাশ করে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড।
BGB-র দাবিতে ক্ষোভ প্রকাশ BSF আধিকারিকের
কিন্তু BGB বা বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড এর এই বিবৃতি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (Border Security Force)। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার, BSF এর তরফে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বা BGB-র দাবি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং বিজিবি-র ওই আধিকারিকের দাবিকে সম্পূর্ণ ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। এবং স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ভারতীয় ভূখণ্ড সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রয়েছে। সেখানে আজও কোনো বাংলাদেশী প্রবেশ করতে পারবে না। সম্প্রতি নতুন বছরের প্রথম দিনেই অর্থাৎ গত ১ জানুয়ারি ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় BGB-র হাতে ধরা পড়েছিল দুই ভারতীয়। আর এই ঘটনাটি ঘটেছিল মেঘালয়-সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্তে।