শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ পুলিশকে আরো কড়া হওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতার উচ্চ আদালত। মদ্যপান করে কেউ গাড়ি চালালে এবং বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটালে কড়া হাতে বিষয়টা দেখার পরামর্শ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এমন পরিস্থিতিতে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করার কথাও বলেছেন বিচারপতি।
পুলিশকে কড়া হওয়ার নির্দেশ
হাওড়ার এক জনৈক ব্যক্তি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে তাঁর ছেলেকে চাপা দিয়েছেন বলে ব্যক্তির অভিযোগ। ঘটনায় ছেলের মৃত্যু হলেও পুলিশ সাধারণ মামলা রুজু করে তদন্ত করছিল বলে আদালতে তিনি জানিয়েছিলেন। সেই মামলার শুনানি চলাকালীন গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। তিনি স্পষ্ট কথায় জানিয়েছেন, “রাজ্য সরকারের সব আইনজীবীর কাছে আমার পরামর্শ, দয়া করে প্রথমে ওই সংক্রান্ত (বড় দুর্ঘটনা) বিষয়ে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করতে বলুন। এ নিয়ে নির্দিষ্ট করে বলে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।”
মত্ত অবস্থায় গাড়ি ছুটিয়ে অনেকেই দুর্ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারংবার বলার পরেও অনেকে সেই কথায় যে কান দেননি সেটা বলাই বাহুল্য। অনেক সময় ছোটোখাটো ঘটনার ক্ষেত্রে জরিমানা কিংবা স্বল্প সময়ের হাজতবাসের মতো সাজা শোনানো হয়। কিংবা যখন কারও মৃত্যু হয়, সেটাকে কি আর ছোটো ঘটনা বলা যায়? পুলিশকে বিচারপতির নির্দেশ, নতুন ধারা যোগ করতে হবে। অভিযুক্তকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া যাবে না।
পদক্ষেপ নেবে পুলিশ?
মদ্যপান করে গাড়ি চালানোর সময়ে পুলিশ ধরলে জরিমানা কিংবা জেল হতে পারে। ছ’মাস থেকে দু’বছর পর্যন্ত কারাবাসের নিয়ম রয়েছে, সেই সঙ্গে জরিমানা। কোনও চালকের ১০০ গ্রাম রক্তে ৩০ মিলিগ্রামের বেশি অ্যালকোহল পাওয়া গেলে তাঁকে শাস্তি দেওয়ার কথা আইনে বলা রয়েছে। প্রথম বার কেউ অতিরিক্ত মদ্যপান করে গাড়ি চালালে দু’হাজার টাকা জরিমানা এবং ছ’মাসের কারাবাস হতে পারে। একই ঘটনা বারবার হতে থাকলে সাজার পরিমাণ বাড়বে। সর্বোচ্চ ২ বছরের কারবাস হতে পারে। চালক মদ্যপান করেছেন কি না, করলেও কতটা করেছেন সেটা জানার জন্য পুলিশ ব্রেথালাইজর নামের একটি যন্ত্র ব্যবহার করে। তাতে ফুঁ দিলেই সব ধরা পড়ে যায়।