প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ইতিমধ্যেই আরজি কর ঘটনায় নির্যাতিতার খুন এবং ধর্ষণ কাণ্ডে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এবং শাস্তিস্বরূপ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে সেই শাস্তির বিরুদ্ধে এবং ফাঁসির দাবিতে হাইকোর্টে আবেদন করেছে রাজ্য সরকার এবং CBI। এদিকে দুর্নীতি মামলায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। নভেম্বর মাসে তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটও জমা দিয়েছেন তদন্তকারীরা।
অসন্তুষ্ট প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট
এদিকে সন্দীপ ঘোষ একজন সরকারি কর্মী হওয়ায় চার্জ গঠনের জন্য রাজ্যের ‘ছাড়পত্র’ নেওয়ার দরকার ছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI এর। তার উপর আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আক্তার আলির দায়ের করা আর্থিক দুর্নীতির মামলায় প্রথম থেকেই তদন্ত করছে CBI। সেই সময় আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে প্রথম চার্জশিট জমা পড়েছিল। চার্জশিট ও অতিরিক্ত নথি মিলিয়ে হাজার পাতার নথি জমা দেয় সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখা। সন্দীপ ঘোষ ছাড়াও সেই নথিতে নাম ছিল বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরা, আফসার আলি খান এবং আশিস পাণ্ডের। এইমুহুর্তে ইডিও আলাদা করে তদন্ত শুরু করেছিল। সম্প্রতি ইসিআইআর দায়ের করে তদন্ত চালাচ্ছে তাঁরা। তবে ইডির তদন্তে অসন্তুষ্ট প্রকাশ করল এবার কলকাতা হাইকোর্ট।
দ্রুত বিচার শেষ করার নির্দেশ
গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে মুখ বন্ধ খামে রিপোর্ট জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু ED যথাসময়ে মামলার চার্জশিট দিতে পারছে না বলে ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করে বিচারক তীর্থঙ্কর ঘোষ। তবে এই আবহে নিম্ন আদালতকে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নিম্ন আদালতে পরবর্তী শুনানির আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ট্রায়াল শুরু করে যত দ্রুত সম্ভব বিচার শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এমনকি দ্রুত শুনানি শেষ করে মামলার নিষ্পত্তির জন্য যথাযথ পদক্ষেপও গ্রহণ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এদিকে আগামিকাল নিম্ন আদালতে এই মামলার শুনানি আছে। সেই হিসেবে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এই মামলার চার্জ গঠন শেষ হওয়ার কথা স্পষ্ট জানানো হয়েছে।
সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED অবশ্য জানিয়েছে, ইতিমধ্যে ২২ জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত সরকারি অফিসারদের বিরুদ্ধে ট্রায়াল শুরুর জন্য গত সোমবারই কনসেন্ট পেয়েছে সিবিআই। তাই সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হতে বাধা নেই। আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলির অভিযোগ ছিল, হাসপাতালের একাধিক আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে রয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। কিন্তু সন্দীপ প্রভাবশালী হওয়ায় এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ হয়নি।