প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছরের পর বছর ধরে আদিবাসী তকমার দাবিতে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কুড়মি (Kurmi) সম্প্রদায়ের মানুষেরা। তাঁরা যে বহিরাগত নয়, সেই ব্যাপারে বারংবার প্রশাসনকে আবেদন জানানো হয়েছিল। ২০১৭ সালে কুড়মিদের লাগাতার আন্দোলনের ফলস্বরূপ কালচারাল রিসার্চ ইন্সটিটিউটকে সমীক্ষা করিয়ে রাজ্য সরকার বিষয়টি পর্যালোচনা করার জন্য কেন্দ্রের কাছে পাঠায়। কেন্দ্র বিস্তারিত তথ্য জানবার জন্য রাজ্যের কাছে চিঠি লিখলেও এর কোনো জবাব পায়নি। যার জেরে রাজ্যের প্রতি ক্ষুব্ধ কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষেরা। তাই আন্দোলনের পথ বার বার বেছে নিচ্ছেন তাঁরা।
কুড়মিদের উদ্দেশে বড় সিদ্ধান্ত হাইকোর্টের
আর এবার বছর শেষে আগেই ফের একই দাবি আদায়ে আগামী ২০ ডিসেম্বর রাজ্য জুড়ে ফের আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছে কুড়মি সমাজ। প্রস্তুতিও চলছে জোর কদমে। কিন্তু তার মাঝেই কুড়মিদের ওই আন্দোলনকে ঘিরে আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার এক বড় নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। কুড়মিদের উদ্দেশে বলা হয়েছে তাঁদের এই আন্দোলনের আঁচ যেন জাতীয় সড়ক ও রেলপথ এর ওপর না পরে। অর্থাৎ জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধ করা যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি আদালতে রাজ্য সরকার জানায় যে এদিন আদালতে, কুড়মিদের দাবির বিষয়গুলি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ। ফলে এ বিষয়ে রাজ্য সরকার কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে না।
নির্দেশ না মানলে উপযুক্ত শাস্তি দেবে রাজ্য
এদিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ আরও জানিয়েছে যে, যদি আদালতের এই নির্দেশ অমান্য করে কুড়মিরা জাতীয় সড়ক ও রেলওয়ে ট্র্যাক অবরোধ করে তাহলে রাজ্য সরকার নিজে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। আসলে শতকের পর শতক ধরে ছোটনাগপুর মালভূমির উচুঁ নিচু পাহাড়ি জল জঙ্গলেই কুড়মিদের বসবাস স্থান। এ রাজ্যের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার জনসংখ্যার একটা বড় অংশ কুড়মি সম্প্রদায়ের। কিন্তু রাজ্য সরকার এখনও সাধারণ জাতি হিসেবে মেনে নেয়নি কুড়মিদের, তাই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন কুড়মিরা।