প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যের সাধারণ মানুষদের কল্যাণের স্বার্থে পশ্চিমবঙ্গ সরকার একের পর এক প্রকল্প এবং উদ্যোগ নিয়ে চলেছে। যার মধ্যে স্বাস্থ্য সাথী (Swasthya Sathi) হল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জনপ্রিয় প্রকল্প। চিকিৎসা ক্ষেত্রে এখন বহু গরীব মানুষের ভরসা হয়ে উঠেছে এই স্কিম। ২০১৬ সালে রাজ্যের প্রতিটি পরিবারকে স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের প্রতিটি পরিবার বিনামূল্যে বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। বহু মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। কিন্তু এবার এই প্রকল্প ফেঁসে গেল আইনি জটে।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়ে হাইকোর্টে মামলা!
রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে গরীব মানুষের চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাপক সুবিধা হলেও এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠে আসছে বারংবার। এমনকি একাধিক জনস্বার্থ মামলাও হয়েছে এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে। ব্যাপক আর্থিক গোলযোগের অভিযোগও উঠে এসেছিল। তেমনই ২০২১ সালে স্বাস্থ্যসাথী’ নিয়ে একটি সংস্থা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছিল। তাদের হয়ে সওয়াল করেন চিকিৎসক কুণাল সাহা।
এই মামলায় চিকিৎসক কুণাল সাহার বক্তব্য ছিল, নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকার এই প্রকল্প চালু করেছে। এই প্রকল্পে পরিবারপিছু স্বাস্থ্য খাতে ৫ লক্ষ টাকা বিমার কথা বলা হলেও সেই সুবিধা বেশির ভাগ মানুষই পাচ্ছেন না। এমনকি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় রোগীদের। অনেক ক্ষেত্রে প্রকল্পের সুবিধা পেতে সমস্যা হয়। এবার সেই মামলা নিয়ে বিস্ফোরক রায় দিল বিচারপতি।
মামলা সংক্রান্ত বড় রায় দিল হাইকোর্ট!
সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ‘স্বাস্থ্যসাথী’ সংক্রান্ত এই মামলাটি শুনানির জন্য কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে। দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর মামলাটি খারিজ করে দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এবং আদালতের তরফে জানানো হয়ে, জনগণের উদ্দেশে রাজ্য সরকার যে কোনও প্রকল্প চালু করতে পারে। সেক্ষেত্রে তাই ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প সরকারি সিদ্ধান্ত। সরকারের নির্দিষ্ট নীতি মেনে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এতে আদালত হস্তক্ষেপ করবে না।
আরও পড়ুনঃ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হার্ট অ্যাটাক, অক্সিজেন সাপোর্টে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী
এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মামলাকারীদের উদ্দেশে আরও জানান যে, ‘‘যদি, এই প্রকল্পটর অস্তিত্ব না থাকত তাহলে সেক্ষেত্রে আপনারা কী বলবেন? তাই সেই কারণে রাজ্যের কোনো প্রকল্প নিয়ে আদালত কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। যদি প্রকল্প সংক্রান্ত কোনো অসুবিধা হয় তাহলে সেক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী বিধায়ক এবং সাংসদদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’’