কলকাতাঃ একদিকে যখন আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ঘটনায় বাংলা তথা সমগ্র দেশ উত্তাল, তখন বড় রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আর কলকাতা হাইকোর্ট যা রায় দিল তা শুনে যে দুর্নীতিকারীদের বুক কেঁপে যেতে পারে। আজ শুক্রবার দুপুরে মামলার শুনানি চলাকালীন কলকাতা হাইকোর্ট জানাল, আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি-সহ সব অভিযোগের তদন্ত করবে সিবিআই। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার মাঝে কলকাতা হাইকোর্টের এহেন রায় যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে।
বড় রায় হাইকোর্টের
আরজি কর ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে আগেই CBI তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বর্তমানে সেটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তবে এবার বিগত কয়েক বছরে আরজি কর হাসপাতালে যাবতীয় যা যা আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে সেসবেরই তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই বলে খবর। আজ এমনই রায় দিয়ে সকলকে চমাকে দিয়েছে হাইকোর্ট।
এই সংক্রান্ত সমস্ত নথি আগামীকাল শনিবার সকাল দশটার মধ্যে সিবিআইকে হস্তান্তর করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে। আজ বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ নির্দেশ দেন, আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত সংক্রান্ত স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিতে হবে সিবিআইকে। হাইকোর্টের এই রায়ে রাজ্য সরকারও ব্যাকফুটে পড়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল যে, সন্দীপকে আড়াল করতেই রাজ্যের তরফে তার বিরুদ্ধে এই সময় আর্থিক তছরুপের মামলা দায়ের করা হয়েছিল। বিরোধীদের অভিযোগ অনুযায়ী, রাজ্য এই মামলায় সন্দীপকে হেফাজতে নিয়ে তাঁকে এবং নিজেকে বাঁচাত। যদিও, বর্তমানে হাইকোর্টের নির্দেশের পর এখন সন্দীপ ঘোষের সব মামলার তদন্তই সিবিআইয়ের হাতে উঠল।
সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ
আরজি কর হাসপাতালকাণ্ডে চিকিৎসক থেকে শুরু করে আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করছেন সিবিআইয়ের অধিকারিকরা। তবে এই হাসপাতালে এখন আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। আর এই ঘটনার মূলে পৌঁছাতে সিট গঠন করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে। ২০২২ সালে হাসপাতালে স্যালাইনের তীব্র আকাল দেখা দিয়েছিল। স্যালাইন সংকট এতটাই তীব্র যে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস, সাগর দত্ত থেকে স্যালাইন জোগাড় করে রোগী পরিষেবা বজায় রাখতে হয়েছিল সেইসময়।
অভিযোগ, যে সংস্থা স্যালাইন সরবরাহ করত, তাদের বিপুল অর্থ বকেয়া ছিল। বেশ কয়েকবার তা মেটানোর জন্য চাপ দিয়েও বকেয়া মেলেনি। আর তাই তারা স্যালাইন সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। সেইসময় আর জি কর হাসপাতালের ফিনান্স থেকে কোনও নাকি হেলদোলই দেখা যায়নি। নেওয়া হয়নি কোনও পদক্ষেপও। এরপর ২০২৩ সালেও এই হাসপাতালে র্যাগিং-এর অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনায় কাঠগড়ায় ছিলেন এই সন্দীপ ঘোষ। কিন্তু সেই সময়ে কিছু প্রমাণ হয়নি। এক কথায় সন্দীপ ঘোষ যেখানে, বিতর্কও যেন সেখানে। এদিকে সন্দীপ ঘোষের পলিগ্রাফ টেস্টের অনুমতিও পেয়ে গিয়েছে সিবিআই। ফলে এবার বড়সড় কিছু ধামাকা হতে পারে।