প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্যালাইনে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে এক প্রসূতির। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হয়েছিল আরও চার জন। তাঁদের মধ্যে এক জন ২২ বছর বয়সী মামনি রুইদাসের মৃত্যু হয় গত শুক্রবার সকালে। অপর এক জনের অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাঁকে জেনারেল শয্যায় পাঠানো হয়েছে। আর বাকি তিন জনের অবস্থা সঙ্কটজনক থাকায় গতকাল অর্থাৎ রবিবার রাতে গ্রিন করিডর করে ওই তিন প্রসূতিকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল থেকে নিয়ে আসা হয়েছে SSKM হাসপাতালে।আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাঁরা। এর জেরে বেশ কিছু দিন ধরে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল হাসপাতাল।
ঘটনাটি কী?
এই ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের স্যালাইন রিঙ্গার্স ল্যাকটেট নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু গত বছর নভেম্বরে স্যালাইন উৎপাদক ওই সংস্থাটিকে কর্ণাটক সরকার কালো তালিকাভুক্ত করার পরে রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল গত ১০ ডিসেম্বর, রিঙ্গার্স ল্যাকটেট স্যালাইনের উৎপাদন এবং সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। আর এই আবহে অভিযোগ উঠছে যে রোগীদের বাতিল করে দেওয়া এই রিঙ্গার্স ল্যাকটেট স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। তদন্তকারী দল অবশ্য ইতিমধ্যেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে কথা বলেছেন অনেকের সঙ্গেই। সম্ভবত তাঁরা স্বাস্থ্য দফতরে একটি রিপোর্ট আজ জমাও দেবেন। আর এই আবহে এবার এই বিষয়ে মামলা উঠল হাইকোর্টে (Calcutta High Court)।
স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে হাইকোর্টে মামলা
সূত্রের খবর, স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার আবেদন করা হল কলকাতা হাই কোর্টে। জানা গিয়েছে এই জোড়া জনস্বার্থ মামলার মধ্যে একটি জনস্বার্থ মামলা করতে চেয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। এবং দ্বিতীয়টির জন্য আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আরেক আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি। আর এই দু’টি জনস্বার্থ মামলাই দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
আইনজীবী এডুলজি আজ কলকাতা হাই কোর্টে জানান, “কর্ণাটকে এক সংস্থা এই খারাপ মানের স্যালাইন ব্যবহার করার ফলে কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছিল। তখন রাজ্যের ওই সংস্থাকে কালো তালিকায় পাঠিয়ে দেয় কর্ণাটক সরকার। ওই সংস্থার থেকে বরাত নেওয়াও বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ফের সম্প্রতি এ রাজ্যেও খারাপ স্যালাইন ব্যবহারের পর মৃত্যুর অভিযোগ উঠে এসেছে।” আর এই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম বলেন, “সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি দেখেছি। রাজ্য সরকার সম্ভবত কোনও পদক্ষেপ করছে।” আগামী বৃহস্পতিবার এডুলজির মামলাটি শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।