প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের পর শুরু হয়েছিল তুমুল বিক্ষোভ। আর সেই বিক্ষোভ পরিস্থিতির মাঝে গ্রুপ সি কর্মীদের ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভলিহুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি ইন্টারিম স্কিম, ২০২৫’ এর মাধ্যমে মাসে ২৫ হাজার ও গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর শিক্ষাকর্মীদের ভাতা দেওয়ার এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা দায়ের হয়েছিল। তাতে আগেই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছিল বিচারপতি অমৃতা সিনহা। ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই নির্দেশ বহাল থাকবে বলে জানা গিয়েছিল। তবে এবার সেই সময়সীমা আরও বাড়ানো হল।
রাজ্যের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বিচারপতি
ভাতা সংক্রান্ত এই মামলায় মামলাকারীদের বক্তব্য ছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক অযোগ্য চাকরিহারাদের থেকে টাকা ফেরত না নিয়ে, দুর্নীতি ঢাকতে ভাতার ব্যবস্থা কেন করছে রাজ্য। দুর্নীতি করে চাকরি পাওয়া শিক্ষাকর্মীরা কীভাবে এই ভাতা পাবে বাড়িতে বসে? যদিও মামলাকারীদের এই সওয়ালে রাজ্যের তরফে বলা হয়েছিল এটি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সিদ্ধান্ত। সরকারের বিশেষ খাত থেকে এই অর্থ বরাদ্দ হয়ে থাকে। সেই সময়ই রাজ্যের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। রাজ্যকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করেন কত সংখ্যক শিক্ষাকর্মী এই টাকা পাবেন? সুপ্রিম কোর্টে একটার পর একটা রিভিউ পিটিশন হতে থাকবে আর এঁরা টাকা পেতে থাকবেন?’ তারপরই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করা হয়।
আরও পড়ুন: আসানসোলে চুরি দুর্গা প্রতিমার ২ মূর্তি! ধৃতকে খুঁটিতে বেঁধে মার স্থানীয়দের
বাড়ানো হল সময়সীমা
কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিল যে, কোনও ভাবেই এই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। আর এবার সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে বড় আপডেট দিল আদালত। দ্য ওয়ালের রিপোর্ট অনুযায়ী আজ অর্থাৎ শুক্রবার, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি চাকরিহারাদের ভাতা মামলার শুনানি উঠেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে। আর তাতেই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি করল রাজ্যের উচ্চ আদালত। বিচারপতি অমৃতা সিনহার স্পষ্ট নির্দেশ, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্য সরকারের এই ভাতা দেওয়া যাবে না। আর তাতেই মাথায় হাত পড়ল রাজ্য সরকারের।