প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ এর ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালে দ্বিতীয় বর্ষের এক পড়ুয়ার ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা তোলপাড় করে দিয়েছিল গোটা রাজ্য রাজনীতিতে। প্রতিবাদের আগুন এতটাই ভয়ংকর ছিল যে সেই আগুনের লেলিহান দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও পড়েছিল। অবশেষে সেই ঘটনায় দোষী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে শিয়ালদা আদালত। অন্যদিকে আরজি কর হাসপাতালে খুন ও ধর্ষণ কাণ্ডের পরেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল (Vineet Goyal)।
বিনীত গোয়েলের মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি
অভিযোগ উঠেছিল তৎকালীন সময়ের পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল আরজি কর কাণ্ডের ঘটনার তদন্তের সময় সাংবাদিকদের সামনে নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে উল্লেখ করে ছিলেন। যা সম্পূর্ণ আইনবিরুদ্ধ। তার প্রতিবাদে তাই কলকাতা হাইকোর্টে বিনীতের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু এবার সম্প্রতি জানা গেল সেই মামলা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। ব্যক্তিগত কারণে দর্শিয়ে তিনি এই মামলা থেকে সরে দাড়াঁচ্ছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
কী কারণে এই সিদ্ধান্ত বিচারপতির?
সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিনীত গোয়েল এর বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে। কিন্তু প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে তাঁর নাম উঠতেই প্রধান বিচারপতি জানান, তিনি মামলাটি ব্যক্তিগত কারণে ছেড়ে দিচ্ছেন। তাই পরে অন্য কোনও বেঞ্চে পাঠানো হবে এই মামলাটি। ২০২৪ এর ৪ অক্টোবর এই মামলার শুনানির জন্য আবেদন গ্রহণ করেছিলেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি বিভাস পট্টনায়েকের ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু এই মুহূর্তে সেই মামলার শুনানি হস্তান্তরিত হতে চলেছে অন্য বেঞ্চে।
আরও পড়ুনঃ ‘লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে অ্যাওয়ার্ড কিনেছে’, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দাবি
প্রসঙ্গত, এই মামলাটি নিয়ে যখন প্রথম বার হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়, তখন আদালতে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি তার কারণ আরজি কর মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। যদিও পরে জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবী হাইকোর্টে জানান, দেশের শীর্ষ আদালত এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেনি। তাই এই মামলা হাইকোর্টের শুনতে বাধা নেই। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাসে আইনজীবী মহেশ জেঠমালানি অভিযোগ করেছিলেন, কলকাতা পুলিশের তত্কালীন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল মৃতার পরিচয় প্রকাশ করেছিলেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা প্রয়োজন। এখন দেখার পালা এই মামলার শুনানি কোন বেঞ্চে হয়।