প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) শুরু থেকে কালী পুজো পর্যন্ত সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। শুধুমাত্র জরুরি মামলার জন্য পুজো অবকাশ কিছু বেঞ্চ তৈরি করা হয়। সেই একই পদ্ধতি আবার গরমের ছুটি এবং শীতের ছুটির সময়ও তৈরি হয়। একমাত্র জরুরি মামলার জন্য কয়েকটি বেঞ্চ তৈরি হয় ছুটির সময়। এদিকে আদালতে জমে আছে মামলার পর মামলা। আর সেই সমস্যা মেটাতে এবার ‘ছুটির ট্র্যাডিশন’ ভাঙতে চলেছে হাইকোর্ট। বড় প্রস্তাব দিল হাইকোর্টের চার বিচারপতি।
ঘটনাটি কী?
সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের চার সিনিয়র বিচারপতি একটি সুপারিশ পত্র পেশ করেন। যেখানে চার বিচারপতির সই করা রয়েছে। আর সেই সুপারিশে বলা হয়েছে, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫ থেকে আর টানা একমাস ছুটি থাকবে না কলকাতা হাইকোর্টে। অর্থাৎ ষষ্ঠীর আগে বন্ধ হবে আদালত এবং লক্ষ্মী পুজোর ঠিক পরদিনই খুলে যাবে হাইকোর্ট। আবার কালীপুজোর সময় দু’দিন ছুটি থাকবে। অর্থাৎ এই ছুটি কমিয়ে দেওয়ার ফলে অন্তত সাতদিনের কর্মদিবস বাড়তে চলেছে আদালতের কর্মীদের। আর তাতেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে আইনজীবীদের মধ্যে।
প্রতি বছর, দুর্গাপুজোর জন্য টানা একমাস ছুটিতে থাকে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু এবার থেকে বিচাপতিদের নির্দেশে সেই ছুটিতে কোপ পড়তে চলেছে। যার ফলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার আশঙ্কা বাড়ছে আইনজীবীদের। এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আইনজীবীদের একাংশ। এদিকে আন্দোলনের আঁচ পেয়েছে বিচারপতিদের কমিটি। কিন্তু তাতেও একমাস ছুটিতে কোপ ফেলার সিদ্ধান্তে অনড় বিচারপতিদের কমিটি। যার ফলে পৃষ্ণ উঠছে কেন বিচারপতিরা এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল।
বাড়বে আদালতে কাজের দিন
বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা হাইকোর্টে গরমের ছুটি থাকত প্রায় একমাস। কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে দেখা যাচ্ছে সেই ছুটিতেও থাবা ফেলেছে সুপ্রিম কোর্টের এই কর্মদিবস বৃদ্ধির নির্দেশিকা। যার ফলে এখন সব মিলিয়ে হাইকোর্ট বছরে মোট ২১০ দিন কাজ চলে। এবার সেটাকেই বাড়িয়ে ২২২ দিন করার ভাবনা করছে আদালত। এই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শঙ্কর প্রসাদ দলপতি জানিয়েছেন, ‘শুধু কাজের দিন বাড়ালে মামলার পাহাড় কমবে না। কলকাতা হাইকোর্টে ৭২ জন বিচারপতি থাকার কথা থাকলে সেখানে ২২টি পদ ফাঁকা। শুধু ছুটি বন্ধ করে কাজের দিন বাড়ালেই হবে না। করতে হবে সঠিক পদ্ধতিতে নিয়োগ।’