ডিএ ইস্যুতে আবারও একবার নতুন করে হাইকোর্টে মুখ পুড়ল রাজ্য সরকারের। শিয়রে রয়েছে লোকসভা নির্বাচন। এদিকে এই নির্বাচন এলেও মনে সুখ নেই বাংলার সরকারি কর্মীদের। বকেয়া এবং কেন্দ্রীয় হারে DA বা মহার্ঘ্য ভাতার দাবিতে শয়ে শয়ে দিন ধরে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সরকারি কর্মীরা।
DA বাড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার
এদিকে ভোটের আগে মোট দু’দফায় ডিএ বাড়িয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তবুও নিজেদের দাবিতে অনড় সরকারি কর্মীরা। তাঁদের একটাই বক্তব্য, ‘ভিক্ষে চাই না।’ বলা ভালো, দিনে দিনে তুমুল অসন্তোষ বাড়ছে সরকারি কর্মীদের মধ্যে। তাঁরা ইতিমধ্যে এও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে বকেয়া না মেটালে ভোটের কাজেও অংশ নেবেন না তাঁরা। এসবের মাঝেই কলকাতা হাইকোর্টে এক কথায় রাম ধাক্কা খেল সরকার। জানা গিয়েছে, এবার ‘হাউস রেন্ট অ্যালোওয়েন্স’ বা HRA সংক্রান্ত একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
আগামী এক মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ঘর ভাড়া ভাতা বা HRA মিটিয়ে দিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে আদালতের এহেন রায়ে বেজায় খুশি আন্দোলনকারীরা, সেইসঙ্গে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন অনেকে। জানা যায়, হুগলির একটি স্কুলের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক সুপর্ণা দাস সরকার সেই মামলা করেন। হাইকোর্টে তাঁর আইনজীবী জানান, ২০০৬ সাল থেকে স্কুলে চাকরি করছেন মক্কেল। অন্যান্য রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মতোই নিয়মমতো ‘হাউস রেন্ট অ্যালোওয়েন্স’ পাচ্ছিলেন। কোনওরকম সমস্যা হয়নি। কিন্তু ২০১৬ সালের এপ্রিল থেকে সমস্যা শুরু হয়। এরপর সুপর্ণা দাসের এইচআরএ বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই মহা ফাঁপরে পড়েন তিনি।
HRA নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা
রাজ্য সরকারের আইনজীবী দাবি করেন, স্বামী এবং স্ত্রী’র দু’জনেই চাকরি করলে ‘হাউস রেন্ট অ্যালোওয়েন্স’ পাওয়া যায় না। এমনকী স্বামী এবং স্ত্রী’র মধ্যে যদি কেউ একজন বেসরকারি চাকরি করেন, তাহলেও এই HRA দেওয়া যায় না। যদিও সরকারের এহেন দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।
আরও পড়ুনঃ তাঁর নাম শুনেই কাঁপে দুর্নীতিবাজরা! হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার জীবনী চমকে দেবে
ওই মহিলার আইনজীবী এরপর স্কুল শিক্ষা দফতরের দ্বারস্থ হন। ‘হাউস রেন্ট অ্যালোওয়েন্স’ চালু করার জন্য অন্যত্রও আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ। এরপর হার না মেনে আবারও একবার বাড়িভাতা চালু করার জন্য হাইকোর্টে মামলা করেন শিক্ষক। তবে এবার খালি হাতে ফেরেন না ওই শিক্ষিকা বা তাঁর আইনজীবী। ওই শিক্ষকের ‘হাউস রেন্ট অ্যালোওয়েন্স’ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিশ্বজিৎ বসু সরকারের দাবিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জানান, স্বামী এবং স্ত্রী’র মধ্যে যদি কেউ একজন বেসরকারি চাকরি করেন, তাহলেও অপরজনের ‘হাউস রেন্ট অ্যালোওয়েন্স’ বন্ধ করতে পারবে না রাজ্য সরকার।