পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ একটা সময় প্রকৃতি সবুজে ভরা থাকলেও মানুষ নিজের প্রয়োজনে বন জঙ্গল সাফ করে বসতবাড়ি বানাতে শুরু করেছে। এছাড়াও রাস্তা নির্মাণ থেকে শুরু করে শিল্পের জন্য জমির প্রয়োজনে বনভূমির পরিমাণ ব্যাপকভাবে কমে গিয়েছে। তাই প্রকৃতিক বৈচিত্র ও জীবজগতের ভারসাম্য রাখতে বেশ কিছু জায়গায় সংরক্ষিত বনাঞ্চল তৈরী করা হয়েছে। এমনই একটি হল পশ্চিমবঙ্গের বক্সা ব্যাঘ্রপ্রকল্প, যেখানে বাঘ সংরক্ষণ করা হয়। তবে সেখানেই নাকি পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠে শুরু করেছে, চালুই হয়েছে পাথর মাফিয়াদের অনুপ্রবেশ। তাই
সংরক্ষিত বনাঞ্চলে হোটেল ও মাফিয়ারাজ নিয়ে রাজ্যকে ভর্ৎসনা কলকাতা হাইকোর্টের
পরিবেশ আদালত বা গ্রিন ট্রাইবুনাল থেকে আগেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের এলাকায় কোনোরকম নির্মাণ করা যাবে না। এদিকে জয়ন্তী ও বক্সা ব্যাঘ্রপ্রকল্পের ‘বাফার’ এলাকার তৈরী হয়েছে এখদিক হোটেল থেকে শুরু করে রিসোর্ট। তারই জেরেই হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। এদিন প্রথমে রাজ্যের থেকে ব্যাঘ্রপ্রকল্প এলাকার প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করে সেটাকে বাণিজ্যিক বনাঞ্চল বানানো যায় কি না জানতে চাওয়া হয় আদালতের তরফ থেকে। আজ আদালতে রাজ্যের তরফ থেকে আইনজীবী জানান, ওই বঞ্চলের একটি অংশকে পর্যটনের জন্য ও কিছু অন্যান্য কাজের জন্য ব্যবহার করা হলেও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হয়নি।
কোনো নির্মাণ থাকবে না : সাফ জানালেন বিচারপতি
আজ অর্থাৎ শুক্রবার মামলার শুনানির সময় বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু জানান, ‘বাঘ সংরক্ষণের জন্য নির্ধারিত জঙ্গলে কিভাবে পর্যটন ভিলেজ তৈরী হচ্ছে? পাথর ভাঙা হচ্ছে সেটা থেকে ইট বানানো হচ্ছে! রাজ্যের কি এগুলো ভেবে দেখার প্রয়োজনীয়তা নেই?’ এখানেই শেষ নয়, এরপর রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে তিনি জানান, ওই এলাকাটা ফেলে দেখেছেন কেন? ওখানেও নির্মাণ কাজ শুরু করে ব্যবসা শুরু করে দিন।
এরপরেই বিচারপতি জানান, ‘ওই এলাকার সব কাজ বন্ধ করুন। কোনো নির্মাণ যদি থেকে থাকে তা সরাতে হবে। সংরক্ষিত বনাঞ্চল এলাকার পরিবেশ রাখা করতে হবে রাজ্যকেই’। অর্থাৎ এই অঞ্চলে কোনো অতিথি নিবাস, হোটেল বা রিসোর্ট থাকবে না বলেই জানালো হাইকোর্ট।