প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ এর এপ্রিলে রাজ্যে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে একধাক্কায় প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের মুখে পড়েছিল। হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ সাব্বির রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল। এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এতদিন ধরে বেআইনিভাবে পাওয়া চাকরিতে যে বেতন সকলে নিয়েছে, সে টাকাও সুদ সমেত ফেরত দিতে হবে। যদিও পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই নির্দেশ স্থগিত রাখা হয়েছে। তা নিয়ে এখন মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। আর এই আবহে এবার আবার প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্রসঙ্গ খবরের শিরোনামে উঠে এল।
সাধারণত নিয়ম অনুয়ায়ী শিক্ষক ও শিক্ষিকারা চাকরিতে নিযুক্ত হওয়ার পর কতদিন চাকরি করছেন অর্থাৎ চাকরির অভিজ্ঞতা কতদিনের, সেই ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল তৈরি করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু বিগত কয়েকদিন ধরে কলকাতা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ এই নিয়মের বিরুদ্ধে কাজ করছে। যার ফলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের বিরুদ্ধে নিয়ম না মানার অভিযোগ ওঠে। এবং এই বিষয়ে মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে।
ঘটনাটি কী?
জানা গিয়েছে, মামলাকারী বনশ্রী মাইতি একজন কলকাতার একটি স্কুলে কর্মরত। ২০০৩ সালে মেদিনীপুরের একটি স্কুলে প্রথমে চাকরি পান তিনি। পরে ২০০৭ সালে তিনি কলকাতার একটি স্কুলে বদলি হন। বর্তমানে যে স্কুলের সহ-শিক্ষিকা সেই স্কুলেরই সংঘমিত্রা সিনহা নামে এক শিক্ষিকাকে প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সংঘমিত্রা সিনহা ২০০৬ সালে চাকরিতে যোগদান করেন। তাই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে ২১ জনের যে তালিকা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ করেছে সেখানে সংঘমিত্রা সিনহার নাম আগে কীভাবে এল? তিনি তো পরে চাকরি পেয়েছিলেন। তাই এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন শিক্ষিকা বনশ্রী মাইতি।
হাইকোর্টের নির্দেশ
এদিকে এই অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের আইনজীবী ভাস্কর প্রসাদ বৈশ্য পাল্টা মন্তব্য করেন, ২০০৭ সালের বদলিটাকে নতুন নিয়োগ হিসাবে ধরা হয়েছে। এদিকে দু’পক্ষের বক্তব্য ভালো করে পর্যালোচনা করেন বিশ্বজিৎ বসু। সবশেষে তিনি এই মামলার পক্ষে এক বড় নির্দেশ দেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে এইমুহুর্তে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্যানেলে স্থগিতাদেশ দেওয়া হল। এবং আগামী ২১ জানুয়ারি রাজ্যকে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেন। এবং জানিয়ে দেন ওই দিনেই হবে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।