প্রীতি পোদ্দার, দুর্গাপুর: আরজি করের পর ফের খবরের শিরোনামে উঠে এল দুর্গাপুর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণের ঘটনা। রাতের অন্ধকারে কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষণ করার অভিযোগে তুমুল শোরগোল শুরু হয়েছে দুর্গাপুরের (Durgapur) বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সমাজে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা প্রসঙ্গে রাজনৈতিক টানাপোড়েনও বেশ বেড়েছে। এমতাবস্থায় দুর্গাপুর কাণ্ডের জল গড়াল কলকাতা হাইকোর্টে। রাজ্যের উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা দায়ের করল ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাইকোর্টে উঠল মামলা
গত শুক্রবার, রাতে পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে ‘গণধর্ষিতা’ হয়েছেন যে ডাক্তারি পড়ুয়া, তিনি আদতে ওড়িশার বাসিন্দা। দ্বিতীয় বর্ষের ওই ডাক্তারি ছাত্রী ছিলেন সে। রাতারাতি এই ভয়ংকর ঘটনা ঘটে যাওয়ায় সেখানে ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে বেশ আতঙ্কিত অভিভাবকেরা। এমতাবস্থায় আবার কলেজে পরীক্ষা চলছে। বাইরে অনেক মানুষের জমায়েত। তাই পরীক্ষার কথা চিন্তা করে কলেজ চত্বরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তাই সেই সমস্যা এড়াতে কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে আজ, বিচারপতির সম্পা দত্ত পালের এজলাসে এই মামলার শুনানি হতে পারে।
ধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে কী বললেন রাজ্যপাল?
ইতিমধ্যে দুর্গাপুরকাণ্ডের জড়িত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে এবং দোষীদের কড়া শাস্তির জন্য পুলিশের তরফেও নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই আবহে গতকাল অর্থাৎ সোমবারই দুর্গাপুরে গেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেখানের চিকিৎসক, নির্যাতিতা এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন বলেন তিনি। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, ”রিয়্যালিটি চেক পেয়েছি। নির্যাতিতা, তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কষ্টটা বোঝার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এভাবে চলতে পারে না। সাম্প্রতিক অতীতে বারংবার একই ধরনের ঘটনা ঘটছে। এ জিনিস বন্ধ হওয়া দরকার। বাংলা এমন জায়গা হওয়া উচিত যাতে মহিলারা সর্বক্ষণ, যে কোনও পরিস্থিতিতে সুরক্ষিত অনুভব করেন।”
আরও পড়ুন: ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক দিয়েই নদিয়ায় তৈরি হল পিচের রাস্তা!
উল্লেখ্য, দুর্গাপুর বেসরকারি মেডিকেল কলেজের গণধর্ষণ কাণ্ডের খবর পাওয়ার পরই দুর্গাপুরে পৌঁছেছিল জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যরা। দুর্গাপুরের পরিস্থিতি নিয়ে কমিশনকে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন কমিশনের সদস্য তথা বিজেপি নেত্রী অর্চনা মজুমদার। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে এবার পদক্ষেপ করেছে কমিশন। ১১ দফা সুপারিশের পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে চিঠি পাঠিয়েছে তারা।