সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সদ্য সমুদ্রের তীর ঘেঁষে দিঘাতে অক্ষয় তৃতীয়ার পূর্ণ লগ্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে জগন্নাথ মন্দিরের (Digha Jagannath Temple)। তবে এই মন্দির হাতে গোনা কয়েকটা দিন যেতে না যেতেই আইনি বিতর্কে জড়াল। সূত্রের খবর, এই মন্দিরের স্থাপন এবং অর্থনীতিকে ঘিরে একাধিক প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচী। এমনকি সেই মামলার শুনানি গ্রহণযোগ্য বলেই বিবেচনা করেছে বিচারপতির সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ।
মামলার প্রেক্ষাপট কী?
আইনজীবী কৌস্তুভ দাবি করেছেন, জগন্নাথ মন্দির পরিচালনার জন্য গঠিত ট্রাস্টে অনুদান দিলে কর ছাড় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি সরকারি সংস্থা হিডকোর ঠিকানা ব্যবহার করা হচ্ছে ট্রাস্টের ঠিকানা হিসেবে। আর এখানেই উঠছে বড় প্রশ্ন। যদি এটি সরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠে, তাহলে কর ছাড়ের কথাই বা কেন আসবে? আবার যদি কোনও ট্রাস্ট পরিচালিত মন্দির হয়, তাহলে সরকারি পরিকাঠামো ব্যবহার করার অধিকার কীভাবে পেল?
সরকার মন্দির তৈরি করতে পারে? কী বলছে নিয়ম?
মামলার মূল প্রশ্ন এখানেই। মামলাকারীর মতে, সংবিধান অনুযায়ী ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের সরকার সরাসরি কোনোরকম ধর্ম স্থাপনা গঠন করতে পারে না বা পরিচালনায় যুক্ত হতে পারেনা। অথচ দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে জোড়াফুল সরকারের ভূমিকা স্পষ্ট।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের হাতেই এই মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন। এমনকি তিনি ঘোষনা করেছেন ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের। এমনকি সেই বোর্ডের সরকারি আধিকারিক ছাড়াও ইসকন মন্দির, কালীঘাট মন্দির এবং পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আধিকারিকদের নাম সামনে উঠে আসছে।
হিডকোর আসল ঠিকানা কী?
এই মামলায় আরও গুরুতর অভিযোগ, যে ট্রাস্ট এখন এই মন্দির পরিচালনা করছে, তার অফিসিয়াল ঠিকানা দেখানো হয়েছে হিডকোর অফিসকে। আর একটি স্বাধীন ট্রাস্ট কীভাবে একটি সরকারি সংস্থার ঠিকানা ব্যবহার করতে পারে, তা নিয়েই উঠছে সবথেকে বড় প্রশ্ন।
আরও পড়ুনঃ আগামী মাসেই RRB NTPC পরীক্ষা! দিনক্ষণ জানালো রেল বোর্ড, কবে মিলবে অ্যাডমিট?
আর এদিকে মন্দির ঘিরে ইতিমধ্যেই ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে দিঘায়। সম্প্রতি নবান্ন থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে যে, এই মন্দির পরিচালনার জন্য 100 জন সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়োগ করা হবে। এর ফলে একদিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে। তবে মামলা অনুসারে প্রশ্ন করা হচ্ছে, কীসের ভিত্তিতে এই নিয়োগ? সুনির্দিষ্ট কোনোরকম সরকারি নিয়ম না মেনেই রাজ্য সরকার যা খুশি তাই করতে লেগেছে।
তবে আপাতত হাইকোর্ট এই মামলাটিকে গ্রহণ করে শুনানির অনুমতি দিয়েছে। সামনের দিনে এই মামলা থেকে কি রায় আসে, সেটাই এখন সবার মনে কৌতুহল। তবে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে- ধর্মীয় ব্যবস্থাপনায় সরকারের অংশগ্রহণ কী সংবিধান মানছে?
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |