বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: উত্তরবঙ্গের মানুষের দাবি পূরণ হতে চলেছে। দীর্ঘ টানাপোড়েনে দাড়ি টেনে অবশেষে সেবকে (Sevoke) তিস্তা নদীর ওপর থেকে যাওয়া ঐতিহাসিক করোনেশন সেতুর বিকল্প দ্বিতীয় তিস্তা সেতু নির্মাণের দায়িত্ব নিল কেন্দ্র। মনে করা হচ্ছে, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে উপকৃত হবেন সমগ্র পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সের মানুষজন। বহু অপেক্ষিত দাবি পূরণ হলে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থার নয়া দিগন্ত খুলে যাবে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ।
তিস্তার উপর দ্বিতীয় সেতু নির্মাণের দায়িত্ব নিল কেন্দ্র
মূলত সেবকের তিস্তা নদীর ওপরে তৈরি ঐতিহাসিক ব্রিটিশ আমলের করোনেশন সেতুর বেহাল দশার কারণে বিকল্প সেতুর দাবি করেছিলেন উত্তরবঙ্গের মানুষ। তবে কেন্দ্রের তরফে বহুদিন সেই দাবি ফেলে রাখা হয়েছিল। বেশ কিছু সূত্র বলছে, অবশেষে পাকাপাকিভাবে দ্বিতীয় সেতু নির্মাণের কাজে হাত লাগাতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেননা 1941 সালে চালু হওয়া করোনেশন সেতুর বয়স প্রায় 84 বছর। বর্তমানে সেতুটির ওপর যানবাহনের চাপ ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিকল্প আরেকটি সেতুর প্রয়োজন ছিল।
আর সেই প্রয়োজন মেটাতে চেয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা যায়, ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছিল এক প্রকার। তবে এই পর্যায়ের মাঝেই খেল দেখায় কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয় বিকল্প অত্যাধুনিক সেতুটি ভারতের কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রকের তরফে তৈরি করা হবে। আর এরপর থেকেই কেন্দ্রের সবুজ সংকেতের জন্য অপেক্ষা করছিলেন উত্তরবঙ্গের মানুষ।
শোনা যাচ্ছে, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে অবশেষে সেই সংকেত মিলেছে কেন্দ্রের তরফে। বেশ কিছু সূত্র বলছে, রাজ্য PWD-র তরফে 1,125 কোটি টাকার আনুমানিক প্রকল্প ব্যয়ের DPR জমা পড়েছিল। আর এই ঘটনার পর পরই দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর নির্মাণের দায়ভার কাঁধে তুলে নিল কেন্দ্র।
ঐতিহ্যবাহী সেতুর ওপর চাপ কমাতেই এই উদ্যোগ
কেন্দ্রের একটি সূত্র দাবি করেছে, সেবকের বর্তমান করোনেশন সেতুটির বয়স অনেকটাই বেড়েছে। সময়ের সাথে সাথে যানবাহনের চাপে এখন সেতুটির হাল বেহাল। এমতাবস্থায়, ব্রিটিশ আমলে তৈরি পুরনো সেতুটির ওপর চাপ কমাতেই 14 মিটার প্রস্থের 4 লেন যুক্ত দ্বিতীয় সেতুটি তৈরি করার পথে হেঁটেছে কেন্দ্রীয় সরকার। জানা যাচ্ছে, এই সেতুটি মূলত রেল সেতুর সাথে সমান্তরাল ভাবে চলবে। সম্প্রতি প্রকল্পের কাজে নিযুক্ত এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনেশন সেতু অঞ্চলটি চিন সীমান্তের কাছাকাছি হওয়ায় এই অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতেই তড়িঘড়ি সেতুটি তৈরির পদক্ষেপ নিল কেন্দ্র।
কেন্দ্রের এমন সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কোন কারণ?
নবান্ন সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় মহাসড়ক পরিবহন মন্ত্রকের তরফে দ্বিতীয় সেতু তৈরির আলাদা কোনও কারণ উল্লেখ করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, রাজ্যের বেশ কয়েকটি জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণে বিলম্বের কারণেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্র। সূত্র বলছে, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে রাজ্য PWD থেকে শুরু করে প্রকল্পের DPR তৈরির কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের বড়সড় ধাক্কা দিল সরকার।
অবশ্যই পড়ুন: ট্রেন হাইজ্যাক করে পাকিস্তান, চিনকে ডেডলাইন দিল BLA! ক্ষতির মুখে জিনপিংয়ের স্বপ্নের প্রকল্প
মমতাকে চিঠি লিখেছেন নীতিন গড়করি
বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মহাসড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গড়করি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি লিখেছিলেন। যেখানে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যের প্রায় 20টি মহাসড়ক প্রকল্পের জন্য দ্রুত জমি অধিগ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন। সেই সাথে চিঠিতে রাজ্য PWD-র জমি অধিগ্রহণে বিলম্বের বিষয়টিকেও চিহ্নিত করা হয়েছিল।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |