প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে আবাস যোজনা (Pradhan Mantri Awas Yojana) নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিবাদ বহু পুরোনো। দুই বছর ধরে এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাজ্যের জন্য বরাদ্দ আবাস যোজনার টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। এই নিয়ে বারবার প্রতিবাদ জানিয়েছে শাসক দল। এমনকি নির্দিষ্ট বকেয়া টাকা পাঠানোর জন্য অনুরোধও করা হয়েছিল কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। অবশেষে রাজ্য সরকারের তরফেই আবাস যোজনার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে আবাস যোজনায় রাজ্যের ১১ লক্ষ মানুষকে বাড়ি বানানোর জন্য প্রথম কিস্তির টাকা দিয়ে দেবে নবান্ন।
আর এই আবহে আবাসের টাকা দেওয়ার আগে তালিকা খতিয়ে দেখার পর কয়েকটি নাম তালিকা থেকে বাদ যায়। এদিকে আবার আগে থেকে বাড়ি রয়েছে এমন অনেকের নামও তালিকা থেকে বাদ পড়েছে বলে দাবি করা হয়। এই সব কারণে গ্রামে গ্রামে ক্ষুব্ধ জনগণ বিক্ষোভ দেখান। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও জেলায় জেলায় এই প্রকল্পের তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। সবশেষে ফের সমীক্ষা পর্যালোচনার নির্দেশ দেওয়া হয় নবান্নের তরফ থেকে। এদিকে পুনরায় আবাসের তালিকা তৈরি করতে রাজ্যের আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে গৃহহীন বাসিন্দা ও মাটির বাড়ি খুঁজতে ফের সমীক্ষার ইঙ্গিত দিলেন কেন্দ্রের কর্তারা।
আবাস যোজনা নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের বৈঠক
সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম-সহ কয়েকটি রাজ্যের আবাস প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা রাজ্য ও জেলা স্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স বৈঠক করেন কেন্দ্রের দুই আধিকারিক। জানা গিয়েছে, ওই দুই আধিকারিক এদিন রাজ্য ও জেলা স্তরের আধিকারিকদের জানান, ২০১৮ সালে তৈরি তালিকার মেয়াদ ফুরিয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য নতুন তালিকা তৈরির জন্য চিঠি দিয়েছে। তাই সমীক্ষা করে নতুন তালিকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই তালিকা ধরেই আগামী ২০২৯-৩০ পর্যন্ত অনুদান পাবেন উপভোক্তারা।
আবাস প্রকল্পের নতুন তালিকা তৈরির প্রস্তুতি
প্রশাসন সূত্রে খবর, দু’টি পর্যায়ে সমীক্ষা হবে। প্রথম পর্যায়ে, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে যে কোনও বাসিন্দা আবেদন করতে পারবেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে, সমীক্ষক দল তথ্য সংগ্রহ করবে। তার ভিত্তিতে তালিকা তৈরি হবে। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের যুগ্ম অধিকর্তা গয়া প্রসাদ ও যুগ্ম সচিব অজয় মোরে জানিয়েছেন, প্রতিটি ব্লকের সমীক্ষক দলকে নিয়ে কর্মশালা করার পরে, আগামী অর্থবর্ষের গোড়া থেকে আবাস প্রকল্পের নতুন তালিকা তৈরির কাজ ফের শুরু হবে। উপভোক্তাদের বাড়ির ১০০টি মডেল দেওয়া হবে, তা থেকে বাছতে হবে।