প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২০১৮ সালে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে খনিজ তেলের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর ২০২০ সালে অশোকনগর থেকে খনিজ তেল উত্তোলনের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে পিএমএল বা পেট্রোলিয়াম মাইনিং লিজ এর আবেদন জানায় ONGC। সেই সময় থেকে রাজ্য সরকারকে মোট ১৯ টি চিঠি দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। এর মধ্যে ১৪ টি চিঠি গিয়েছে ওএনজিসি তরফে, ৩ টি চিঠি কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক এবং ২ টি চিঠি প্রাকৃতিক গ্যাসের ডাইরেক্টরেট জেনারেল তরফ থেকে পাঠানো হয়েছে। যদিও সে সব জায়গায় এখনও খননকার্য শুরু করা যায়নি। কেন্দ্রের অভিযোগ, রাজ্যের তরফে এখনও পিএমএল দেওয়া হয়নি।
পেট্রোলিয়াম মাইনিং লিজ দিতে নারাজ রাজ্য
অশোকনগরের মোট ৫.৮৮ বর্গ কিলোমিটার এবং রাজ্যের অন্যান্য প্রান্ত মিলিয়ে মোট ৯৯.০৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় খনিজ তেলের সন্ধান মিলেছে। এই জায়গায় খননের জন্যেই চিঠি পাঠানো হয়েছে রাজ্যের কাছে। এর পাশাপাশি রানাঘাট, কাঁকপুলের মতো এলাকাতেও খনিজ তেলের সন্ধান মিলেছে। প্রসঙ্গত, খনিজ তেল দেশের সম্পদ হলেও কোনও রাজ্যের মাটির তলায় এই সম্পদ থাকলে কেন্দ্রকে সেখানে খননের জন্য ওই রাজ্যের কাছ থেকে পেট্রোলিয়াম মাইনিং লিজ নিতে হয়। তবে, রাজ্যের তরফে খনন কার্য শুরু করার জন্য গ্রিন সিগন্যাল পাওয়া যায়নি। এমনই দাবি তোলা হয়েছে সংসদে।
নতুন কর্মসংস্থানের আশা
এদিন সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার রাজ্যে পেট্রোলিয়াম শিল্পের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। সেখানে এই প্রশ্নের জবাবে এমনটাই দাবি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী। এদিকে এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে খনিজ তেলের জন্য ইতিমধ্যে ১,০৪৫.৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। যদি খননকার্যের মাধ্যমে রাজ্যের মাটির তলা থেকে তেল উত্তোলন শুরু করা যায়, তবে সেই বাবদ প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গের আয় হতে পারে ৮,১২৬ কোটি টাকা। শুধু তাই নয় এর পাশাপাশি রাজ্যে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হতে পারে বলে দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর।
আর এই কেন্দ্র রাজ্য দ্বন্দ্ব নিয়ে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছে, রাজ্য সরকারের দেরি উন্নয়নের পথে বিরাট বাধার সৃষ্টি করছে। পশ্চিমবঙ্গে খনিজ তেলের সন্ধান রাজ্যের উন্নয়নে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। তাই এই জটিলতা দূর হলে পশ্চিমবঙ্গ দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তাই সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে।