প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন বাকি। দেখতে দেখতে ক্রমেই এগিয়ে এল বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (Bengal Business Summit)। আগামী ৫ এবং ৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে এই সম্মেলন। তাই শেষ মুহূর্তে চলছে জোর কদমে প্রস্তুতি। প্রতি বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নানা শিল্প সম্মেলনে রাজ্যে শিল্প গড়ে তুলতে আহ্বান জানান শিল্পপতিদের। এবং সেই সম্মেলনে হাজির হন একাধিক মানুষ। তবে সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হচ্ছে যে পশ্চিমবঙ্গে লগ্নি প্রস্তাব এলেও তা বাস্তবায়িত হয় না সঠিক সময়ে।
কেন্দ্রের রিপোর্টে বিস্ফোরক তথ্য
শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ এর জানুয়ারি-জুলাইয়ে বাংলায় মোট লগ্নি প্রস্তাব এসেছে ২০,৯০০ কোটি টাকার। কিন্তু সেই লগ্নির দশ ভাগের মাত্র এক ভাগ বাস্তবায়িত হয়েছে। অর্থাৎ ২২৫৬ কোটি টাকা লগ্নি বাস্তবায়িত হয়েছে। তবে বাংলার শিল্প মহলের দাবি, ২০২৩-সালে জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসে মোট ১৬ টির মধ্যে ১২০০ কোটি টাকার ১৪টি প্রস্তাব রূপায়ণ করা হয়েছিল। তাই সেখত্রে বলা যায় গত বছরের লগ্নি বাস্তবায়ন ২০২৩ এর তুলনায় অনেকটাই ভালো। কারণ গত বছর লগ্নি প্রস্তাব এসেছিল ২২ টি, আর বাস্তবায়িত হয়েছে ২৭টি।
তালিকার ভিত্তিতে কত নম্বরে বাংলা?
এদিকে কেন্দ্রের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের প্রকল্প বাস্তবায়নের রিপোর্টের নিরিখে সবচেয়ে এগিয়ে মহারাষ্ট্র। মাত্র সাত মাসের মধ্যে সেখানে ১৫৮ টি প্রকল্প বাস্তবে রূপান্তরিত করা হয়েছে। আর এর পরের স্থানেই রয়েছে গুজরাত, সেখানে প্রকল্প রূপায়িত হয়েছে ১২৫ টি। মধ্যপ্রদেশে প্রকল্প রূপায়িত হয়েছে ৭৪ টি। তার পরেই যথাক্রমে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ু। বাংলার স্থান এই তালিকায় সপ্তমে। এবং অষ্টম স্থানে যৌথ ভাবে রয়েছে কর্ণাটক, রাজস্থান ও ওড়িশা। তবে গত বছরে ফেব্রুয়ারিতে পশ্চিমবঙ্গে প্রস্তাব বাস্তবায়িত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এবং মোট লগ্নি হয়েছে ৬৮৫ কোটি টাকা তার সঙ্গে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ১৫০০ জন কর্মীর। কিন্তু তবুও শিল্পের ক্ষেত্রে পিছিয়ে বাংলা।
এই প্রসঙ্গে, এক শিল্পকর্তা জানিয়েছেন, বারবার রাজ্য সরকার লগ্নি টানতে সফল বলে দাবি করলেও, কেন্দ্রের এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে দিয়েছে যে বাংলায় শিল্পের হাল খুবই খারাপ। কিন্তু অবাক করা বিষয় হল প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে রাজ্য কখনই মুখ খোলেনি। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রের দৌলতে এই তথ্য প্রকাশ্যে এল বলে জানা গেল। তবে শিল্প বিশেষজ্ঞ সুপর্ণ মৈত্রও জানিয়েছেন, “এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দোষ রাজ্য সরকারের নয়। কারণ শিল্পপতিদের কথা বা চুক্তির ভিত্তিতে রাজ্য লগ্নি প্রস্তাবের তথ্য কেন্দ্রকে জানালেও পরে সেই শিল্পপতিরা পিছু হটে যায়।”