সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: গতকাল সারারাত বৃষ্টির তাণ্ডবে কলকাতা (Kolkata Rain) শহর জলের তলায়। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত প্রবল বর্ষণে যান চলাচল, রাস্তাঘাট সব বিপর্যস্ত। তার থেকেও বড় দুঃসংবাদ, বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ১০ জন শহরবাসী। আর মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সরাসরি এবার তিনি বিদ্যুৎ পরিষেবা সংস্থা CESC-র দিকে আঙুল তুললেন। তিনি অভিযোগ করছেন, কলকাতার দায়িত্ব CESC নিয়েছে। তাহলে এখানকার পরিকাঠামগত উন্নয়ন কেন করছে না? এখানে ব্যবসা করছে আর আধুনিকীকরণ করছে রাজস্থানে! এর দায় কোনওভাবেই এড়ানো যাবে না।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে CESC-র পাল্টা জবাব
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিবৃতি দিয়েছে CESC। সংস্থা দাবি করছে, বিদ্যুতের খুঁটি, রাস্তার আলো, ট্রাফিক সিগন্যাল তাদের আওতায় পড়ে না। তারা বলেছে, রাস্তার আলোর খুঁটি এবং ট্রাফিক লাইট আমাদের মালিকাধীন বা রক্ষণাবেক্ষণের আওতায় নয়। এগুলি আমরা পরিচালনা করি না। তারা এও জানিয়েছে, যে সমস্ত এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনা ঘটেছে, সেসব জায়গায় আপাতত বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেখানে পরিষেবা চালু হবে না।
As a matter of abundant caution considering public safety, due to extreme water-logging as a result of incessant rainfall, supply to certain areas continues to be kept switched off proactively by us.
We shall be able to restore power only when we are informed by the appropriate… pic.twitter.com/hSuWa5Ex4i
— CESC Limited (@CESCLimited) September 23, 2025
উল্লেখ্য, একবালপুরের হোসেন শাহ রোড থেকে শুরু করে নেতাজি নগর, বেনিয়াপুকুর, বেহালা, হরিদেবপুর, গরফা, সব জায়গায় একই দৃশ্য। খোলা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একের পর এক প্রাণহানি ঘটছে। গড়িয়াহাটে উদ্ধার হয়েছে মৃতদেহ। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে খোলা বৈদ্যুতিক তার পড়েছিল।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী শুধু দায়ই চাপিয়েই থামেননি। মৃতদের পরিবারের পাশা দাঁড়ানোর কথাও তিনি বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে CESC-কেই চাকরি দিতে হবে মৃতদের পরিবারকে। যদিও CESC তাদের বিবৃতিতে এই অভিযোগের কোনওরকম দায় স্বীকার করেনি।
আরও পড়ুনঃ আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা দক্ষিণবঙ্গে! হার মানাবে আমফানের দুর্যোগকে, আগামীকালের আবহাওয়া
কেন এই বৃষ্টির তাণ্ডব?
আবহাওয়া দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, সোমবার রাত আড়াইটা থেকে ভোর সাড়ে পাঁচটার মধ্যে কলকাতায় ১৮৫.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর গোটা ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৮ মিলিমিটার। হাওয়া অফিসের মতে এটি কোনও মেঘভাঙা বৃষ্টি নয়। আসলে উড়িষ্যা সংলগ্ন নিম্নচাপ এবং প্রচুর জলীয় বাষ্প পুঞ্জীভূত হওয়ার কারণেই এই ভয়াবহ বৃষ্টি। তারা জানাচ্ছে, নিম্নচাপ অবস্থান বদল করবে না এবং আগামী কয়েক ঘন্টা সমস্ত জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।