প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: অবশেষে ভালো মন্দ মিশিয়ে ২০২৪ সালকে বিদায় জানিয়ে ২০২৫ কে স্বাগত জানিয়েছে গোটা বিশ্ব। নতুন বছরের শুরুটা যাতে সকলের ভালোভাবে কাটে তার জন্য উৎসবের মেজাজ বজায় রাখা হয়েছে সর্বত্র। খোঁজ শুরু হয়েছে নতুন ক্যালেন্ডারের। আর ক্যালেন্ডার হাতে পাওয়া মাত্রই ছুটির দিনগুলো নির্ধারণ করে শুরু হয়ে গিয়েছে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যানিং। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০২৫ সালের ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে। একনজরে সম্পূর্ণটা দেখে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
জানুয়ারি ফেব্রুয়ারিতে ছুটির তালিকা
আজ অর্থাৎ ১ জানুয়ারি, বুধবার ইংরেজি নতুন বছরের জন্য ছুটি থাকছে। আগামী ৬ জানুয়ারি শিখ সম্প্রদায়ের প্রকাশ পরব উপলক্ষে ছুটি দেওয়া হয়েছে। এরপর স্বামী বিবেকানন্দ এর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ১২ জানুয়ারি ছুটি দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। যদিও সেই দিনের ছুটি মার খেয়েছে। কারণ সেদিন রবিবার পড়েছে। এরপর আগামী ২৩ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার নেতাজি জন্মজয়ন্তীর জন্যে ছুটি থাকবে। এবং সাধারণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ২৬ জানুয়ারি ছুটি থাকবে। তবে এই ছুটিও নষ্ট হতে চলেছে। কারণ সেদিনও পড়েছে রবিবার। জানুয়ারি মাসে মোট ৫ দিন ছুটি পড়েছে। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় দিনেই ছুটি থাকছে। কারণ সেদিন সরস্বতী পুজো পড়ছে। তবে সেই ছুটিও মার খেতে চলেছে। কারণ সেদিন রবিবার। তবে দুঃখ করে লাভ নেই। এর জন্য রাজ্য সরকার পরেরদিন অর্থাৎ ৩ ফেব্রুয়ারি বাড়তি ছুটি দিয়েছে। এরপর ১২ ফেব্রুয়ারি গুরু রবিদাসদের ভক্তদের জন্য জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ছুটি দিয়েছে রাজ্য সরকার।
মার্চেও রয়েছে লম্বা ছুটির তালিকা
এছাড়াও আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার শবে বরাত ও পঞ্চানন বর্মার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ছুটি থাকবে। তার সঙ্গে ২৬ ফেব্রুয়ারি, শিবরাত্রি উপলক্ষে ছুটি। সেদিন বুধবার। সব মিলিয়ে ফেব্রুয়ারিতে মোট ৫ টি ছুটি থাকছে। অন্যদিকে মার্চ মাসে সরকারী কর্মীরা এক লম্বা উইকেন্ড পেতে চলেছে। আগামী ১৪ মার্চ শুক্রবার এবং ১৫ মার্চ শনিবার দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে দুইদিন ছুটি দেওয়া হচ্ছে। এবং হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকীতে ২৭ মার্চ, বৃহস্পতিবার থেকে মিলবে লম্বা ছুটি। তবে এর মাঝে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান রয়েছে। ইদ-উল-ফিতরের জন্যে ৩১ মার্চ, সোমবার এবং ১ এপ্রিল, মঙ্গলবার ছুটি। সেক্ষেত্রে যদি কেউ ২৮ মার্চ শুক্রবার ছুটি নেন, তাহলে লম্বা ছুটি মিলবে। সেই সময় ঘুরতে যাওয়ার দারুণ এক পরিকল্পনা করা যাবে।
সরকারী ছুটির তালিকা অনুযায়ী রামনবমীর পড়েছে আগামী ৬ এপ্রিল। কিন্তু সেদিন রবিবার পড়ায় সেই ছুটিও নষ্ট হয়েছে। আগামী ১০ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার মহাবীর জয়ন্তীর ছুটি। বি আর অম্বেডকরের জন্মদিন উপলক্ষে ১৪ এপ্রিল, সোমবার ছুটি থাকছে। এখানেও রয়েছে এক লম্বা উইকেন্ডের টুইস্ট। ১৫ এপ্রিলও ছুটি বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে। গুড ফ্রাইডের জন্যে আবার ১৮ এপ্রিল, শুক্রবার ছুটি। খ্রিস্টানদের জন্য ১৯ এপ্রিল ইস্টার স্যাটারডে ছুটি থাকছে। মাঝে যদি কেউ ১৬ এবং ১৭ তারিখ ছুটি নেওয়ার পরিকল্পনা করে তাহলে ৬ দিনের লম্বা উইকেন্ড শুরু হবে।
মে মাসে রয়েছে অজস্র ছুটি। প্রথম দিনেই অর্থাৎ মে ডে উপলক্ষে ১ মে, বৃহস্পতিবার ছুটি থাকবে। রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে ৯ মে, শুক্রবার ছুটি। বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে ১২ মে, সোমবার ছুটি থাকবে। এর ফলে, টানা ৪ দিন অর্থাৎ ৯ থেকে ১২ মে পর্যন্ত ছুটি মিলবে। এরপর ইদুজ্জোহার ছুটি থাকবে ৬ জুন, শুক্রবার এবং ৭ জুন, শনিবার। রথযাত্রা উপলক্ষে ২৭ জুন শুক্রবার ছুটি থাকবে। ৩০ জুন হুল দিবসের ছুটি থাকবে। তবে জুলাই মাদে ১ টা দিন ছুটি থাকছে। মহরমের জন্যে ৬ জুলাই রবিবার ছুটি। এদিকে সেই ছুটিও মার খেয়েছে। অন্যদিকে আগস্ট মাসে জন্মাষ্টমী ও স্বাধীনতা দিবস একই দিনে অর্থাৎ ১৫ আগস্ট পড়ায়, শুক্রবার এই ছুটি মিলবে।
ভরপুর পুজোর ছুটি
এরপর আসছে পূজা ভ্যাকেশন। জানা গিয়েছে তালিকা অনুযায়ী মহালয়া উপলক্ষে ২১ সেপ্টেম্বর, রবিবার ছুটি থাকবে। সেদিনের ছুটি ‘নষ্ট’ হচ্ছে রবিবার এমনই ছুটি থাকার কারণে। তারপর দুর্গাপুজোর ছুটি শুরু হবে ২৬ সেপ্টেম্বর চতুর্থী থেকে ৪ অক্টোবর দ্বাদশী পর্যন্ত। ২ অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তী। এর পরে লক্ষ্মীপুজোর জন্যে ৬ এবং ৭ অক্টোবর সোমবার এবং মঙ্গলবারও ছুটি থাকবে। এই আবহে দুর্গাপুজোয় চতুর্থী থেকে টানা লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত ছুটি থাকবে। বছরের শেষে কালীপুজোয় ২০ অক্টোবর, সোমবার থেকে ২২ অক্টোবর ছুটি।
ভ্রাতৃদ্বিতীয়া উপলক্ষে আবার পরের দিন ২৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি থাকবে। এবং ছটপুজোয় ২৭ ও ২৮ অক্টোবর সোমবার এবং মঙ্গলবার ছুটি থাকবে। এরপর গুরু নানক এর জয়ন্তীর জন্যে ৫ নভেম্বর বুধবার ছুটি। বিরসা মুন্ডার জন্মবার্ষিকীতে ছুটি ১৫ নভেম্বর শনিবার। আর বছরের শেষ সরকারি ছুটি ২৫ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে।