প্রীতি পোদ্দার, মহিষাদল: এর আগে বেশ কয়েকবার বিশেষ করে বর্ষার সময় নদী বাঁধের ভাঙনের খবর উঠে এসেছিল শিরোনামে। নদীর তীব্র স্রোতে গোটা গ্রাম ভেসে যাওয়ার খবরও মিলেছিল। সেই কারণে সবসময়ই বেশ আতঙ্কিত থাকেন নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষজনদের। চলতি বছর বর্ষা যেন একেবারে যেতেই চাইছে না। আর এবার শরতের আবহেও রূপনারায়ণ নদের নদী বাঁধে দেখা গিয়েছে ভাঙন। মুহূর্তের মধ্যেই মহিষাদলের (Mahishadal) বাড় অমৃতবেড়িয়ায় পূর্বপল্লিতে কয়েক কোটি টাকা খরচে তৈরি রূপনারায়ণের বাঁধ এক মাসেই ধসে গেল। যার জেরে আতঙ্কিত এলাকাবাসী।
ভেঙ্গে পড়ল কোটি টাকা মূল্যের বাঁধ
রিপোর্ট অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই ধীরে ধীরে প্রায় ১০০ মিটারের বেশি কংক্রিটের ঢালাই রাস্তা সহ রূপনারায়ণ নদের বাঁধ ধস নামতে থাকে। যার এক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয় এলাকায়। এরপর রাত যত বাড়তে থাকে ততই নদীবাঁধ বসে যায়। শেষে রাত ১২টা নাগাদ নদীবাঁধ একেবারে ১০ফুট বসে যায় নদীগর্ভে। স্থানীয়দের তরফে জানা গিয়েছে ওইদিন সকালে জোয়ারের সময় তখনই নদীবাঁধ কিছুটা বসে গিয়েছিল। পরে নদীতে ভাটা পড়ায় আর কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু রাতে ফের জোয়ার হওয়ায় নদী বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার ভেঙে নদীর গর্ভে চলে যায়। প্রথমদিকে নদী বাঁধ মেরামতের জন্য এগিয়ে আসে গ্রামবাসীরা কিন্তু সব চেষ্টাই বিফলে যায়।
রাতারাতি বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়
দুর্যোগ ছাড়াই নদী বাঁধ এইভাবে বসে যাওয়ায় গঠনকার্য নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের অমৃতবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাড় অমৃতবেড়িয়া গ্রামে রূপনারায়ণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পরেই খবর দেওয়া হয় প্রশাসনিক আধিকারিকদের। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি ছুটে আসেন স্থানীয় বিডিও সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা। রাতারাতি সমস্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে প্রশাসন, সেচ দফতর ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় নদী বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, ওইদিন বিজয়া সম্মিলনি উপলক্ষ্যে তমলুক শহরেই ছিলেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তিনি রাতেই সেচ দপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবব্রত সরকার, বিডিও বরুণাশিস সরকার, ডিএসপি শান্তব্রত সরকার এবং থানার ওসির সঙ্গে বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: রাজ্যে সাইবার হানা! আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সাইট হ্যাক করে হুমকি পাকিস্তানের
প্রসঙ্গত, নদীবাঁধ সুরক্ষার জন্য এক মাস আগে মহিষাদলের বাড় অমৃতবেড়িয়ায় পূর্বপল্লিতে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ২১০০মিটার কাজ হয়েছে। নদীতে খাঁচা ফেলে পরিকাঠামো শক্ত করে কংক্রিটের কাজ হয়। কিন্তু, তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। এক মাসের মধ্যেই হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ল নদীবাঁধ। ঘটনাস্থলে ইতিমধ্যেই পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন রয়েছে। যে জায়গায় কাজ চলছে সেখানে যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়েছে। ৫০ জনের বেশি শ্রমিক ওখানে কাজ করছেন। আশা করা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই কাজ শেষ হবে।