দার্জিলিং…উত্তরবঙ্গের এক সুন্দর ও মন মাতানো জায়গা। যারা প্রকৃতি ও পাহাড় ভালোবাসেন তাঁরা জীবনে বারবার এই দার্জিলিং এর টানে সেখানে ছুটে যায়। কিলোমিটারের পর কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত থাকা চা বাগান সকলকে এখানে রীতিমতো টানে। যদিও এখন ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে দার্জিলিং সহ সমগ্র উত্তরবঙ্গে। উত্তরবঙ্গে এখন যাওয়া মানেই হল বিপদ ডেকে আনা বলে দাবি করছেন অনেকে। ফলে এই বর্ষার মরসুমে আপনিও কি দার্জিলিং ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন? তাহলে আজকের এই লেখাটি রইল শুধুমাত্র আপনার জন্য।
বন্ধ হয়ে গেল জনপ্রিয় দুই পর্যটনস্থল
পাহাড়ে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পর্যটক ও স্থানীয়দের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে জিটিএ রক গার্ডেন এবং গঙ্গামায়া পার্কের জনপ্রিয় পর্যটন স্থানগুলি বন্ধ করে দিয়েছে। সকলের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর।
শনিবার গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের পর্যটন বিভাগ একটি আদেশ জারি করে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দুটি পর্যটন স্পট বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছে। জিটিএ জানিয়েছে যে গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ভূমিধস, রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এরইসঙ্গে ফুলে ফেঁপে উঠেছে নদীগুলি। এখন সেখানে থাকা বেশিরভাগ পর্যটকই যত দ্রুত সম্ভব সমতলে ফিরে আসার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। এদিকে আবহাওয়াও ঘন ঘন মুড বদল করছে। ফলে সবকিছু বিবেচনা করে রক গার্ডেন ও গঙ্গামায়া পার্ক সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হচ্ছে।
কী বলছে GTA
জিটিএ পর্যটন বিভাগের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সোনম ভুটিয়া জানিয়েছেন, আবহাওয়ার কারণে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে পর্যটকদের কোনও সম্ভাব্য দুর্ঘটনা বা ক্ষয়ক্ষতি রোধ করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাগান ও পার্ক বন্ধ থাকবে। তিনি জানিয়েছেন, ‘অবিরাম ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিধস এবং ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা অসুবিধার জন্য দুঃখিত তবে সুরক্ষা এবং সুস্থতা আমাদের সর্বপ্রথম অগ্রাধিকার। জলস্তর নেমে যাওয়া অবধি দুটি স্পট বন্ধ থাকবে। সব পর্যটক ও অপারেটরদের এসব এলাকা এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’
বন্ধ কার্শিয়াং-এর বহু রাস্তা
কার্শিয়াং মহকুমার পাগলাঝোড়ায় ১১০ নম্বর জাতীয় সড়কে বড় বড় ফাটল দেখা দেওয়ায় যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। কালিম্পং জেলা প্রশাসন এই অঞ্চলের রাস্তার অবস্থা জারি করেছে। নোটিশে বলা হয়েছে, ১৯ মাইলের সেলফি পয়েন্টে পাহাড় কাটার জন্য শেঠি ঝোরা থেকে চিত্রে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ রাখা হয়েছে।রবি ঝোড়া থেকে তিস্তা বাজার পর্যন্ত রাস্তাও মেরামত কাজ ও জল জমে কারণে বন্ধ রয়েছে।
ভূমিধসের কারণে সিকিম রাজ্যের সংযোগকারী জাতীয় সড়ক-৭১৭এ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে কালিম্পং জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, কালিম্পং থেকে পানবু ও লাভা হয়ে শিলিগুড়ি যাওয়ার রাস্তা যেমন খোলা ছিল, তেমনই রংপো থেকে মুনসং হয়ে লাভা যাওয়ার রাস্তাও খোলা রয়েছে এদিকে তিস্তার জল ঢুকে প্লাবিত জলপাইগুড়ির মালবাজারের টোটগাঁও গ্রাম। কালিম্পঙের তিস্তাবাজারে দার্জিলিং-কালিম্পং রোডের ওপর দিয়ে বইছে তিস্তার জল। রবিবার পর্যন্ত এনজেপি থেকে দার্জিলিং টয় ট্রেন পরিষেবা অবধি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।