প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে কাউন্টডাউন। আগামী ৩ মার্চ থেকে শুরু হবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা (Higher Secondary Exam)। যা শেষ হবে আগামী ১৮ মার্চ। তাই হাতে সময় আছে আর মাত্র দেড় মাস। তাই কোনো সময় নস্ট না করে তাই জোরকদমে শুরু হয়ে গিয়েছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। তবে প্রতি বছর যেই প্রথায় উচ্চমাধ্যমিক হয়ে আসছে সেই প্রথার এবার অবসান ঘটতে চলেছে। আসলে চলতি বছর থেকেই একাদশ ও দ্বাদশে শুরু হচ্ছে সেমেস্টার পদ্ধতি। তাই হিসাব মত ২০২৫-এই শেষবারের মতো পুরোনো প্রথায় হবে উচ্চ মাধ্যমিক। কিন্তু তার আগেই দেখা গেল প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পড়ুয়া এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে না।
ক্রমেই বাড়ছে স্কুলছুটের সংখ্যা!
আসলে ২০২৩ সালে যে সমস্ত পড়ুয়া মাধ্যমিক পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়েছেন তাঁরাই ২০২৫ এ উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে রিপোর্ট সূত্রে দেখা যাচ্ছে ২০২৩-এ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন মোট ৫,৬৫,৪২৮ জন ছাত্র ছাত্রী। কিন্তু সেই অনুযায়ী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন অনেক কম পড়ুয়া। যার ফলে উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেকটাই নিম্নমুখী। দিনের পর দিন পরীক্ষার্থীদের এইরকম স্কুল ছুট পরিস্থিতির পিছনে দায়ী করা হচ্ছে রাজ্য সরকারের অন্যতম প্রকল্প ‘তরুণের স্বপ্ন’ কে। আসলে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে, পুজোর পরে অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢুকতেই পড়ুয়ার সংখ্যা অনেকটাই কমতে থাকে স্কুলগুলিতে। একই ছবি দেখা যাচ্ছে একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রেও।
কী বলছেন শিক্ষা সংসদের আধিকারিক?
এই বিষয়ে শিক্ষা সংসদের নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, বিগত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে পঠনপাঠনের শুরুতে ৩-৪ মাস যত সংখ্যক পড়ুয়া স্কুলে আসছে, পরীক্ষার সময় তাঁদের সংখ্যা অনেকটাই কমে যাচ্ছে। আর এটা তখনই দেখা যাচ্ছে যখন পড়ুয়াদের ১০ হাজার টাকা অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করছে। আবার এমনও দেখা গিয়েছে যে বহু ছাত্র-ছাত্রী আছে যারা নকল বিল জমা দিয়ে স্কুলে আর আসছে না যার ফলে নাম নথিভুক্তির প্রক্রিয়াও সম্পূর্ণ করে না। আর এই সব কারণের ফলে বিদ্যালয়ে পড়াশোনার পরিকাঠামো অনেকটাই প্রভাবিত হচ্ছে।
তবে স্কুলছুট পড়ুয়াদের অনেকাংশ পরিসংখ্যান কমে যাওয়া প্রসঙ্গে বলছে, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির ফলে পারিবারিক সমস্যা ও আর্থিক সচ্ছলতার অভাবেই তারা পড়াশোনা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। শুধু তাই নয় পঠনপাঠনের পরিকাঠামো ও উপযুক্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে ভালো শিক্ষক শিক্ষিকা না থাকায় পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে তাঁরা। জানা গিয়েছে এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় পাঁচ লাখের ঘরে।