জেলার হাসপাতাল করল অসাধ্য সাধন! শিশুর মুখ থেকে একহাত রড বের করে বাঁচালেন ডাক্তাররা

Published on:

tamluk hospital

প্রীতি পোদ্দার, তমলুক: বাড়ির সকলে যে যার কাজে ব্যস্ত। এদিকে খেলার কোনো সঙ্গী নেই। তাই অগত্যা একাই খেলছিল ছোট্টো মৌমিতা। জানালার জং ধরা রড নিয়ে খেলছিল তিনবছরের এই শিশুটি। কিন্তু পা ফস্কে গিয়েই এক ভয়ংকর বড় বিপদের মুখে পরে গেল। শেষে মৃত্যুর মুখ থেকে শিশুটিকে বাঁচিয়ে আনলেন ডাক্তাররা।

ঘটনাটি কী?

WhatsApp Community Join Now

সূত্রের খবর, হলদিয়ার ভবানীপুর থানা এলাকার বাড়উত্তরহিংলি গ্রামের বাসিন্দা হলেন দীপক দাস। তাঁরই তিন বছরের মেয়ে মৌমিতা গত মঙ্গলবার সকালে একটি লোহার রড নিয়ে খেলছিল। কিন্তু সেই লোহার রডই যে মৌমিতার জীবনে ঝড় নিয়ে আসবে তা কারোরই জানা ছিল না। খেলাচ্ছলে বার বার রডটি মৌমিতা মুখেও ঢোকাচ্ছিল। আচমকা সেই অবস্থায় সে পড়ে যায়। তখনই রডটি তার মুখের ভিতর তালুতে গেঁথে যায়। প্রবল রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এদিকে মা কাজে ব্যস্ত। চিৎকার আর কান্নার আওয়াজ শুনে ছুটে আসতেই মা এই দৃশ্য দেখে অজ্ঞান হয়ে যান।

অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত চিকিৎসকদের

মৌমিতার অঝোরে কান্না এবং চিৎকারে পরিবারের অন্য সদস্যরা ছুটে এসে কোনো সময় নস্ট না করে দ্রুত তাকে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু ভয়াবহ এই পরিস্থিতি দেখে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল সঙ্গে সঙ্গে রেফার করে দেয় এসএসকেএম হাসপাতালে। কিন্তু যাওয়ার পথে অনর্গল রক্তপাতে তাঁর মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। তাই নিমতৌড়িতে বাঁক নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স ঘুরিয়ে তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত অস্থি বিশেষজ্ঞ শিবশঙ্কর দে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। আর তাঁর এই সিদ্ধান্তে সঙ্গে ছিলেন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ তিতাস কর, চিকিৎসক বিদিশা মুখোপাধ্যায় ও সৈকত ভট্টাচার্য। টানা প্রায় দেড় ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে লোহার রড বের করা হয় মৌমিতার মুখ থেকে। সফল হয় অস্ত্রোপচার।

এই প্রসঙ্গে তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অস্থি বিশেষজ্ঞ শিবশঙ্কর দে বলেন,‘‘তিন বছরের শিশুর মুখের ভিতরের উপরিভাগে তালুতে রডটি প্রায় ১০ সেন্টিমিটার ঢুকে আটকে গিয়েছিল। টেনে বের করা একপ্রকার অসম্ভব ছিল। তাই শেষে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল সেই অস্ত্রোপচার। তবে সাফল্যের সঙ্গে লোহার রড বের করা গিয়েছে। শিশুর শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। আর এই অস্ত্রোপচার একটি জেলার হাসপাতালের ক্ষেত্রে এটা খুবই বড় সাফল্য।’’

সঙ্গে থাকুন ➥
X