কলকাতাঃ বাংলা জুড়ে এখন গ্যাসের আকাল দেখা দিয়েছে। গ্যাসের জন্য বুকিং করা হলেও সেই গ্যাস আসতে আসতে ৫ থেকে ১০ দিনও লেগে যাচ্ছে, যা কিনা এক কথায় নজিরবিহীন। যে কারণে মহা সমস্যায় পড়েছেন কলকাতা শহরসহ বাংলার বহু জায়গায় মানুষ। সকলের মুখে এখন একটাই প্রশ্ন, রান্নার গ্যাস না থাকলে রান্না হবে কিসে? এমনিতে এখন এমন কোনও বাড়ি নেই যেখানে গ্যাসে রান্না হয় না সেখানে এখানেও গ্যাসের আকাল দেওয়া মোটেই ভালো চোখে দেখছে না কেউ।
বাংলাজুড়ে গ্যাসের অকাল
টাকা দিয়ে গ্যাস বুকিং করেও এখন বাংলায় গ্যাসের আকাল দেখা দিয়েছে। যে কারণে স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের মাথায় চিন্তার বাজ ভেঙে পড়েছে। স্থানীয় ডিলারদের কাছে গেলেও সকলের একটাই বক্তব্য, আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই সকলের মুখে একটাই প্রশ্ন আচমকা শহরে এরকম পরিস্থিতি কেন তৈরি হল? এই বিষয়ে ইন্ডিয়ান অয়েল সূত্রে জানা যাচ্ছে, কল্যাণীতে টানা কর্মবিরতি চলার জেরে এহেন পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই কল্যাণীতে ইন্ডেনের LPG বটলিং প্লান্টে শ্রমিক বিক্ষোভ চলছিল। বেশ কয়েক মাস ধরেই বিক্ষোভ চলছে কারখানায়।
এদিকে এখন থেকে মূলত উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া ও কলকাতার একটা বড় অংশে সিলিন্ডার যায়। যদিও টানা এই বিক্ষোভের জেরে কাজ বন্ধ ছিল। সময় কিছুটা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও নতুন করে বিক্ষোভের আগুনে জ্বলতে শুরু করেছে কারখানা। পরিস্থিতির সামাল দিতে প্রশাসনের তরফে জল পাঠানো হয় কারখানায়। তবে পরিস্থিতি আরো সরগরম হয়ে ওঠে। অভিযোগ, তাঁদের গেটেই আটকে মারধর ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ডিস্ট্রিবিউটরদের আরও অভিযোগ, গোটা ঘটনাটি ঘটেছে বিধায়কের সামনে।
দীর্ঘদিন ধরে সঠিক মজুরি না দেওয়ার অভিযোগ
আন্দোলনকারীরা দীর্ঘদিন ধরে সঠিক মজুরি না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন কারখানার বিরুদ্ধে। ইন্ডিয়ান অয়েলের তরফে একজন শ্রমিক পিছু মজুরি প্রায় ৯০০ টাকা দেওয়া হলেও ঠিকাদার তাঁদের মাত্র ৪০০ টাকা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। সেইসঙ্গে দেদার বেআইনিভাবে কর্মী নিয়োগ। অন্যদিকে বিধায়কের দাবি, এসব দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনায় বসার কথা বলা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু আধিকারিকরা বসছেন না। ঘটনা প্রসঙ্গে নদীয়া ডিস্ট্রিক্ট ইন্ডেন এলপিজি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা তথা রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘বিধায়ক পয়সা নেওয়ার জন্য এসব করছেন। মানুষকে ভুগতে হচ্ছে। আমরা প্রশাসনকে বলব কড়াভাবে বিষয়টি দেখতে।’ এদিকে এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী দিনে গ্যাসের ব্যাপক আকাল দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।